রংপুর নগরীতে জলাবদ্ধ সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরার পথে খালের পানিতে পড়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নগরের নিউ জুম্মাপাড়ার তসলিমের খামারসংলগ্ন দোলাপাড়া এলাকায় কেডি খালে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন- নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪৮) এবং তার ছেলে রিপন (৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রংপুরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জলাবদ্ধতায় নগরীর মিস্ত্রিপাড়া থেকে জুম্মাপাড়া যাওয়ার প্রায় চার কিলোমিটারের রাস্তা হাঁটুপানিতে ডুবে আছে। এর মাঝে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে নিচু এলাকা হওয়ায় পানি থৈ থৈ অবস্থা। সড়কের এক পাশে অবস্থিত কেডি খালে এখনো সাত থেকে আট ফুট পানি রয়েছে। বিকল্প রাস্তা দিয়ে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয় গন্তব্যে। এজন্য এলাকাবাসী মাত্র চার ফিট প্রশস্ত একটি সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে রিপনদের পরিবার নগরের নিউ জুম্মাপাড়া করিমিয়া মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছিল। মা রোকেয়া বেগম বাড়িতে আসা-যাওয়া করলেও বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম মাদ্রাসাতেই ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে শফিকুলকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য ছোট ছেলে রিপনকে নিয়ে ওই মাদ্রাসায় যান রোকেয়া। বাড়ি ফেরার পথে আল হেরা স্কুলের কাছে পা পিছলে বড় ছেলে কেডি খালে পড়ে ডুবে যায়। তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই রিপন পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেও ডুবে যায়। এ সময় মা রোকেয়া বেগম তার দুই ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য খালের পানিতে ঝাঁপ দেন। বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম (১২) কোনোরকমে উঠতে সক্ষম হলেও রোকেয়া ও রিপন পানিতে তলিয়ে যান।
পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয় লোকজন মা-ছেলেকে উদ্ধার করেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দুজনেরই মৃত্যু হয়। বড় ছেলে শফিকুল ইসলামকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টাইমস/এইচইউ