আর্মেনিয়ার ৬০০ সেনা নিহত: গ্রামের পর গ্রাম দখল নিচ্ছে আজারি বাহিনী

বিরোধপূর্ণ নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজারবাইজানেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মারা গেছে উভয় দেশের সেনা ও বেসামরিক লোকজন।

তবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আর্মেনিয়া। দেশটির ৬০০ সেনা এরই মধ্যে আজারবাইজানের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। নাগার্নো-কারাবাখে থাকা আর্মেনিয়ার বহু সেনাচৌকি ও অস্থায়ী ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে আজারি সেনারা। আর্মেনিয়ার দখলে থাকা নিজের অসংখ্য গ্রামের দখল ছিনিয়ে নিচ্ছে আজারি বাহিনী।

বৃহস্পতিবারও আজারি বাহিনীর হামলায় ৪৯ জন আর্মেনিয় সেনা নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার কাছ থেকে অন্তত ১০টি এলাকার দখল ছিনিয়ে নিয়েছে আজারবাইজান বাহিনী।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম ইয়েনি শাফাক জানিয়েছে, ২৭ সেপ্টম্বর থেকে নতুন করে শুরু হওয়া যুদ্ধে আর্মেনিয়ার বাহিনী বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। দখলকৃত এলাকা ছেড়ে আর্মেনিয়ার সেনারা পালিয়ে যাচ্ছে।

১০ অক্টোবর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান যুদ্ধবিরতি দিয়ে সমঝোতায় বসলেও সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। সেই সময় আজারবাইজান অভিযোগ করেছিল, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আর্মেনিয়ার বাহিনী আজারবাইজানের অভ্যন্তরে গোলাবর্ষণ করেছে। এরপর আজারি বাহিনী তাদের হামলার তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়।

নিহত আর্মেনীয় সেনাদের গণকবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, কারাবাখ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। তবে ওই অঞ্চলটি জাতিগত আর্মেনীয়রা ১৯৯০’র দশক থেকে দখলে রেখেছিল।

এনিয়ে উভয় দেশের মধ্যে বহুবার সংঘর্ষ হয়েছে। এ পর্যন্ত এসব সংঘর্ষে উভয় দেশের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে গত বুধবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, আজারবাইজানের হামলায় আমাদের সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি আর্মেনিয়ার সব ভুক্তভোগী, শহীদ, তাদের পরিবার, অভিভাবক, বিশেষ করে শহীদদের মায়েদের উদ্দেশ্যে নতজানু হয়ে সম্মান জানাই। তাদের এই ক্ষতিকে আমি আমার ও আমার পরিবারের ব্যক্তিগত ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করছি।

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার সংঘাত শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান বারবার টেলিফোনের মাধ্যমে আলোচনায় বসেছেন। কিন্তু দুই দেশের যুদ্ধ থামাতে পারেননি এ দুই বিশ্বনেতা।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: