চীনের অনিন্দ্যসুন্দর তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরি

নান্দনিকতা ও স্থাপত্যশৈলীতে চীনের ‘তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরি’ পৃথিবীর অন্যসব পাঠাগার থেকে আলাদা। বিশ্বজুড়ে দর্শনার্থীদের কাছে এর আকর্ষণ এতটাই যে উদ্বোধনের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১০,০০০ জন দর্শনার্থী এটি পরিদর্শন করেছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৮,০০০ জন পর্যন্ত।

পাঠাগারটি দেখে আপনার মনে হতে পারে বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী নির্ভর সিনেমার কোনো ভবন এটি। অনিন্দ্যসুন্দর এই পাঠাগারটির অবস্থান চীনের কেন্দ্র শাসিত প্রশাসনিক অঞ্চল তিয়ানজিনের বিনহাই জেলাতে। এর ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ সম্পাদন করেছে তিয়ানজিন আর্বান প্ল্যানিং ডিজাইন ইন্সটিটিউট এবং ডাচ আর্কিটেক্ট ফার্ম এমভিআরডিভি।

পাঠাগারটির মোট আয়তন ৩৩,৭০০ বর্গ মিটার বা ৩,৬২,৭৪৩.৭৮ বর্গ ফুট। এর মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত বিন্যস্ত অসংখ্য বইয়ের তাক সমূহ ১২ লক্ষাধিক বই ধারণে সক্ষম। বইয়ের তাকগুলি সংযুক্ত রয়েছে পাঠাগারের সাদা রঙের দেয়ালগুলোতে।

তাকের পাশে বসেই বই পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে, আছে ওঠা-নামার জন্য সিঁড়ি। বইয়ের এই তাক সমূহকে ‘বুক মাউন্টেইন’ বা বইয়ের পাহাড়ও বলে থাকেন অনেকে। এর বিস্তৃতি এতটাই যে আপনার বয়স ১৪ বছরের নিচে হলে,  ‘হাই হিল’ পরিহিত থাকলে কিংবা পাহাড়ে চড়ার মতো শারীরিক সামর্থ্য না থাকলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে সেখানে না ওঠার পরামর্শ দেবে।

পাঠাগারটির মাঝ বরাবর ১১০ লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন চোখের মনির আকৃতির একটি অডিটোরিয়াম রয়েছে। অডিটোরিয়ামটির আশেপাশের ফাঁকা অংশটি চোখ আকৃতির হওয়ায় ভবনটি বাইরে থেকে দেখলে এই অংশটি চোখের মতন দেখায়, তাই এর ডাক নাম ‘দ্যা আই’।

পাঁচতলা এই পাঠাগারটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় পড়ার স্থান ও লাউঞ্জ রয়েছে। এরপর থেকে উপরের দিকে রয়েছে কম্পিউটার রুম, মিটিং রুম এবং অফিস।

২০১৭ সালের ১ অক্টোবর লাইব্রেরিটি তার পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিবছর কয়েক লাখ দর্শনার্থী এটি পরিদর্শন করেন।

তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরিকে বলা হয়ে থাকে চীনের সুন্দরতম পাঠাগার, তবে এটি একইসাথে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি পাঠাগার সেকথাও নিঃসন্দেহে বলা যায়।

তথ্যসূত্র: সিএনএন, এমভিআরডিভি, উইকিপিডিয়া, দ্যা কালচারাল ট্রিপ।

 

টাইমস/এনজে

Share this news on: