অবৈধ স্ক্র্যাপ বাড়ায় বাজারে এলপিজি সিলিন্ডার সংকট!

দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ স্ক্র্যাপ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) খালি সিলিন্ডারের। সম্প্রতি একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী খালি সিলিন্ডার বাজার থেকে কিনে স্টিল রি-রোলিং মিলগুলোয় কমদামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। স্টিল বা ইস্পাতের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ ধরণের অবৈধ ব্যবসা তাদের কাছে লাভজনক হয়ে উঠেছে। কিন্তু এতে করে সিলিন্ডার স্ক্র্যাপ করার সময়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, পাশাপাশি বাজারে দেখা দিচ্ছে সিলিন্ডার সংকট এবং যার ফলে ব্যবসায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এই খাতের বিনিয়োগকারীরা।

এলপিজি সিলিন্ডার একটি অতি-সংবেদনশীল পণ্য। ফলে, উন্নত মানের স্টিল বা ইস্পাত ব্যবহার করে তৈরি করা হয় এসব সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডার উৎপাদনে খরচ বেশি পড়ে, তাই এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তুকি দিয়ে এসব সিলিন্ডার বাজারজাত করে থাকে। এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর লক্ষ্য থাকে সাশ্রয়ী দামে গ্রাহকের ঘরে এলপিজি সিলিন্ডার পৌছে দেয়া। গ্যাস শেষ হয়ে গেলে এগুলো আবার রিফিল করার জন্য এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। তবে, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মাঝখানের এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন।

গত ৭ ও ১২ নভেম্বর এরকম ঘটনাই ঘটেছে। ওইদিন, টাঙ্গাইলের কয়েকটি গাড়িতে করে জি-গ্যাস এলপিজির খালি সিলিন্ডার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। পরে দেখা যায়, ওই সিলিন্ডারগুলো রায়পুর থানার লেংরা বাজারে অবস্থিত মেসার্স মানিক আয়রন মার্টের গোডাউন ও আশপাশের কয়েকটি গোডাউনে নামানো হচ্ছে। পরে মেসার্স মানিক আয়রন মার্টের গোডাউনে পুলিশ গিয়ে দেখে সিলিন্ডারগুলো থেকে ভালব আলাদা করা হচ্ছে। গোডাউনে উপস্থিত মানিক আয়রন মার্টের দায়িত্বশীলকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে হলে তিনি ভুল স্বীকারকরে নেন এবং ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবেন না বলে জানান। খালি সিলিন্ডারগুলোর পরিবহণের সাথে জড়িত ড্রাইভার ও মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এভাবে খালি সিলিন্ডার নিয়ে গিয়ে স্টিল কারখানায় বিক্রি করে দেয়ার মাধ্যমে দেশে এলপিজি ব্যবসার অশেষ ক্ষতি করা হচ্ছে বলে মনে করে এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন মহল। তারা দাবি করেন, অবৈধভাবে খালি সিলিন্ডার বিক্রির সাথে জড়িত

ব্যবসায়ী ও পরিবহণ মালিকদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এজন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
দেশে এলপিজি খাতের ব্যবসা ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর এই খাতকে সমৃদ্ধ করতে হলে অনতিবিলম্বে এর পেছনের অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে।

Share this news on: