ছাত্রলীগের নেতৃত্ব হারালেন শোভন-রাব্বানী

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিটি নিয়ে বাণিজ্য, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানা ধরনের অভিযোগের মুখে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

শনিবার গণভবনে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থেকে কয়েক শতাংশ চাঁদা দাবি করেছেন বলে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে শোভন ও রাব্বানীর বিরুদ্ধে।

৮ সেপ্টেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার কথাও বলেছেন। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী দুদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও ফিরে আসেন।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার গোলাম রাব্বানী ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন। চিঠিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ও গুলিস্তানের কার্যালয়ের বিষয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। ২০ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে দেরি করে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন।

রাব্বানী দাবি করেন, তারা বারবার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। কমিটি বাণিজ্য আর মাদক ছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ হওয়ার বড় কারণ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের টাকা চাওয়ার যে অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে, তাতেও ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগাতে অর্থ লেনদেনের বিষয় এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের অফিস কক্ষে মাদক পাওয়ার বিষয়টি।

গত ১৩ মে সম্মেলনের এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতারা আন্দোলন শুরু করেন।

অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিবির ও ছাত্রদলের নেতাদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান সেই আন্দোলনের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়ান দুই শীর্ষ নেতা। অবশেষে শনিবার রাতে এই দুই নেতাকে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীকে বাদ দিয়ে তাদের জায়গায় সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: