ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৮তম সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার স্থানীয় বাকু কংগ্রেস সেন্টারে ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ফোরাম ন্যাম’র দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাকু কংগ্রেস সেন্টারের প্ল্যানারি হলে সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় সম্মেলনে স্থলে এসে পৌঁছালে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট তাকে স্বাগত জানান।

অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে সম্মেলনে আরও যোগ দিয়েছেন- ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেল, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, জিবুতি প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর, ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আড্ডো, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলি, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এম ভেনকাইয়া নাইডু, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাংগুলি বেরদিমুহামেদো, চেয়ারম্যান অব দ্য প্রেসিডেন্সি অব বসনিয়া অ্যান্ড হার্জগোবিনা বাকির ইজতেবেগোভিচ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ মুস্তাফা আল-সারাজ।

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট এবং ন্যামের বর্তমান চেয়ারপারসন নিকোলাস মাদুরো সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত ভাষণ দেন।

তার ভাষণের পরই আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ সর্বসম্মতিক্রমে আগামী তিন বছরের জন্য ন্যাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরই প্রদত্ত ভাষণে তিনি ন্যাম’কে বাংডুং আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের সভাপতি তিজানি মুহাম্মাদ-বান্দে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

পূর্ব ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার সংযোগ স্থলে এই সম্মেলনের আয়োজক দেশ আজারবাইজানের ভৌগলিক অবস্থান এবং এর জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি। বহু জাতিগত এবং এবং ধর্মাবলম্বীদের এই দেশের শতকরা ৯৬ জন নাগরিকই ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

সম্মেলনের শুরুতেই ২০১৬ সালে ভেনিজুয়েলায় অনুষ্ঠিত ১৭ তম ন্যাম সম্মেলনের পর থেকে এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী ন্যাম নেতৃবৃন্দের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এবারকার ১৮ তম ন্যাম সম্মেলনের সাধারণ বিতর্কের বিষয়বস্তু হচ্ছে- সকলের সম্মিলিত এবং পর্যাপ্ত সাড়া প্রদানের মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে বাংডং নীতিমালা সমুন্নত করা।

ন্যাম বিশ্বের ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি ফোরাম, যা বড় কোনো পাওয়ার ব্লকের সঙ্গে বা বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত নয়। জাতিসংঘের পর এটি বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলোর বৃহত্তম গ্রুপিং। এতে ১৭টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র এবং ১০টি পর্যবেক্ষণ সংস্থা রয়েছে।

এটি জাতিসংঘের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংগঠন, বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৫৫ শতাংশ জনগণ এই ন্যামের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অধিবাসী।

এই দেশগুলোতে বিশ্বের তেলের ৭৫ শতাংশেরও বেশি মজুদ এবং ৫০ শতাংশেরও বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে, পাশাপাশি বৃহত্তম মানব ও প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।

ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ও সাবেক যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসিপ ব্রোজ টিটোর উদ্যোগে ১৯৫৫ সালে বাংডং সম্মেলনে সম্মত নীতিমালা প্রণয়নের পর ১৯৬১ সালে যুগোস্লাভিয়া বেলগ্রেড ন্যাম প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভেনেজুয়েলার মারগারিটা দ্বীপে ২০১৬ সালে ১৭তম ন্যাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার পতন এবং আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরাশক্তির মধ্যকার স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন ন্যাম প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সূত্র: বাসস

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: