পীরগাছায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীর হাত-পায়ের রগ কর্তন, স্বামী গ্রেপ্তার

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় বিয়ের ৩৬ দিনের মাথায় নববধূকে নির্যাতন করে হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনায় স্বামী শাহাজাদা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত শাহাজাদা মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পীরগাছা থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত শাহজাদা মিয়া পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মনছুর আলীর ছেলে।

জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়ার সঙ্গে গত ২০ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের। এ সময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার মেয়ের জামাইকে যৌতুক দেন। এ দিকে মেয়ের বিয়ের মেহেদীর রং মুছে যেতে না যেতেই জামাতা শাহজাদা মিয়া আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। পরবর্তীতে তার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় নববধূ শিউলি বেগমের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।

গত ২৬ অক্টোবর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে স্বামী শাহজাদা মিয়া শিউলি বেগমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। এ সময় হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বজনেরা মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেন। পরে রাতে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসককে দিয়ে নববধূর পায়ে পাঁচটি ও হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে তাকে বাড়িতে আটক রাখেন।

গৃহবধূর স্বজনরা জানান, খবর পেয়ে শিউলি বেগমের মা রহিমা বেগম ও মামি পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে শ্বশুরবাড়ির স্বজনেরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে ২৭ অক্টোবর সকালে পীরগাছা থানা পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

গৃহবধূর বাবা ফজলুল হক জানান, মেয়ের বিয়ের ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে।

পীরগাছা থানার ওসি মো. রেজাউল করিম জানান, মঙ্গলবার রাতে পুলিশের একটি দল উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের নেকমামুদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী স্বামী শাহজাদা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: