আগুনের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুনে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভিড় করছেন আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা উৎসুক মানুষ। এর ফলে ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি, নিরাপত্তা ও সহায়তা কার্যক্রম চালাতে আসা ব্যক্তিরা নিজেদের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

উৎসুক জনতার অযথা ভিড়, ফটো-ভিডিওগ্রাফিতে বস্তির ভেতরের সরু রাস্তায় চলাচলে লম্বা ভিড় লেগে আছে। উদ্ধার ও সহায়তা কর্মীরা বলছেন, মানুষের ঢল ক্ষতিগ্রস্তদের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কড়াইল বস্তি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

দেখা যায়, মহাখালীর খামারবাড়ি মাঠ থেকে শুরু করে বউবাজার ঘাট পর্যন্ত মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি দেখছে। কারও হাতে মোবাইল, কেউ লাইভ করছে, আবার কেউ ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করছে। এই ভিড়ের কারণে মূল প্রবেশপথ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের চলাচলও কঠিন হয়ে পড়েছে।

বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করতে আসা ডেসকোর এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক জায়গায় তার পুড়ে গেছে, কোথাও আবার ঝুলে আছে। আমরা সেগুলো পরীক্ষা করছি। কিন্তু এই এলাকায় এতো মানুষ যে, ঠিকমতো কাজ করা যাচ্ছে না। এভাবে কাজ চললে নিরাপত্তাজনিত মারাত্মক ঝুঁকি আছে।


ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পৌঁছাতে গিয়ে রাস্তায় দু–এক জায়গায় দেখা গেছে, ভিড় ঠেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো নিজের ধ্বংসস্তূপে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। ঘর হারানো আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের ঘর তো শেষ, এখন অন্তত দেখতে চাই কী অবস্থা। কিন্তু ভিড়ের কারণে ঢুকতেই পারছি না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মানুষের ভিড় না থাকলে আমরা নিজেদের কিছু জিনিস খুঁজে নিতে পারতাম।

এদিকে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, ফায়ার সার্ভিস, এলাকাবাসী বারবার অনুরোধ করছেন কৌতূহলী জনতাকে কিছুটা দূরে থাকতে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের চলাচল সহজ হয় এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি না তৈরি হয়।

রাজিব আহমেদ নামে এক ব্র্যাক কর্মকর্তা বলেন, মানুষ দেখে যেতে চায় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি খুব সেনসিটিভ। ক্ষতিগ্রস্তদের চলাচল, ত্রাণ দেওয়া এবং নিরাপত্তা সবই ভিড় কমলে সহজ হবে।

এদিকে সকাল পেরিয়ে বেলা বাড়তে থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভিড় কমেনি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪৭তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ফের যমুনা অভিমুখে মিছিলের ডাক Nov 26, 2025
img
কী আছে হোয়াটসঅ্যাপের ‘অ্যাবাউট’ ফিচারে! Nov 26, 2025
img
ভবিষ্যতে শ্রদ্ধা ও আলিয়া ভাটের বড় পর্দায় জুটি বাঁধার সম্ভাবনা Nov 26, 2025
img
আশুলিয়ায় ঘটনায় চলছে ২০তম দিনের সাক্ষ্য Nov 26, 2025
img
বিএনপি নেতা ফজলুর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগ Nov 26, 2025
img
বিশ্বব্যাপী ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে এইচপি, আস্থা এআইতে! Nov 26, 2025
img
রিমেক নয়, নতুন কাহিনী নিয়ে হাজির মেগা স্টার পবন কল্যাণ Nov 26, 2025
img
শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে Nov 26, 2025
img
আসন্ন নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ৩২৮১১ প্রবাসীর নিবন্ধন Nov 26, 2025
img
বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় জার্মানি Nov 26, 2025
img
এবার মামলা হচ্ছে তিশার বিরুদ্ধে Nov 26, 2025
img

কড়াইলের আগুনে নিঃস্ব হাজারও পরিবার

প্রাণে বাঁচলেও রক্ষা পায়নি ‘সুতা পরিমাণ’ সম্পদও Nov 26, 2025
img
এখনও বের হচ্ছে ধোঁয়া, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শেষ সম্বল খুঁজছে বস্তিবাসী Nov 26, 2025
img
সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সব বাহিনী প্রস্তুত : সিইসি Nov 26, 2025
img
বঙ্গোপসাগরের কাছে মালাক্কায় ঘূর্ণিঝড়, আজ আঘাতের আশঙ্কা Nov 26, 2025
img
আগুনের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় Nov 26, 2025
img
বিএনপির আয়-ব্যয়ের ফিরিস্তি তুলে ধরলেন রুমিন ফারহানা Nov 26, 2025
img
মায়ের জন্য ‘দেবদাস’ চরিত্রে অভিনয়ের কথা শেয়ার করলেন শাহরুখ Nov 26, 2025
img
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় জার্মানি Nov 26, 2025
img
নতুন ওয়েব সিরিজে যোগ দিচ্ছে তানিয়া, শুটিং শুরু ডিসেম্বরে Nov 26, 2025