বরিশালের বাকেরগঞ্জে জ্বীনের আছর ছাড়ানোর নামে পানিতে চুবিয়ে একজনকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। নিহতের নাম কালাম মৃধা (৪৮)।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-৮ এর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাকেরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার মৃত কাঞ্চন আলী ফকিরের ছেলে মো. রিয়াজউদ্দিন ফকির (৪৮), তার স্ত্রী মোছা. তাসলিমা আক্তার লাকী (৪২) ও ছেলে মো. তৌহিদুর রহমান (১৮)।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি জেলার বাকেরগঞ্জ থানার আউলিয়াপুরে চিকিৎসার নামে কালাম মৃধা (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুকুরের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকেই মূল আসামিসহ অন্যরা পলাতক ছিল। পরে এ নিয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-৮। তদন্তের এক পর্যায়ে র্যাব-৮ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল জানতে পারে যে, মামলার প্রধান আসামি রিয়াজউদ্দিন ফকির তার স্ত্রী ও ছেলেসহ বরিশালের রূপাতলী এলাকায় অবস্থান করছে। পরে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রূপাতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের বাকেরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত কালামের স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, কিছুদিন ধরে তার স্বামী অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। জ্বীনে ধরেছে এমন ধারণা থেকে সেই আছর ছাড়াতে শুক্রবার সকালে স্বামীকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের রিয়াজ ফকিরের কাছে নিয়ে যান। পরে রিয়াজ ফকির জ্বীন ছাড়ানোর নামে ওইদিন সকাল ১০টায় এবং বিকাল ৪টায় তার বাড়ির পুকুরে দুই দফা কালামকে চুবিয়ে এবং লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এক পর্যায়ে কালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রিয়াজ ফকির একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে রাতে রিয়াজ ফকির তার বোন অনিকার বাসায় অসুস্থ কালাম মৃধাকে লুকিয়ে রাখেন। এসময় কালাম সুস্থ আছে বলে তার স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেন রিয়াজ।
তিনি অভিযোগ করেন, পরে কালামের মৃত্যু হলে রিয়াজ ফকির বাড়ির পাশে একটি বাগানে নিয়ে তার লাশ ফেলে রাখেন। শনিবার সকালে প্রতিবেশীরা বাগানে একটি লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠায়।
বাকেরগঞ্জে জ্বীন ছাড়ানোর নামে পানিতে চুবিয়ে একজনকে হত্যা
টাইমস/এইচইউ