বর্তমানে বিশ্বব্যাপী একটি আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের থাবায় পৃথিবীর প্রায় দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের সব মানুষও এখন গৃহবন্দী।
বর্তমানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশের নামকরা সব তারকারাও ঘরবন্দী সময় পার করছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর।
এখন তিনি বাসায় থেকে প্রতি মুহূর্তে সবাইকে সচেতন করে যাচ্ছেন প্রাণঘাতী ভাইরাসটি সম্পর্কে।
এদিকে নিজ পরিবারের সঙ্গে আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত কাটানো নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন গায়ক আসিফ। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া আমাকে সাতদিনের বেশী ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। সন্ধ্যার পর কোন দাওয়াত থাকলে খুব অস্বস্তিতে থাকি। আমার ভাইবোনরাও সন্ধ্যার পর কোন ফ্যামিলি গেটটুগেদার রাখে না আমার যন্ত্রণায়। আমি সবসময় আমার নিজের একটা বলয়ের মধ্যে থেকেছি।
সন্ধ্যার পর কোথাও গেলেও দ্রুত চলে আসার চেষ্টা করি। যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন তারা এই কালচারে অভ্যস্ত। আমাদের রুটিনবিহীন জীবনে রিজিকের দৌড়ঝাঁপে মাঝেমধ্যে খুব পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ি, রাত নয়টা দশটা বেজে যায় বিছানা ছাড়তে। বেগম বাসায় ছেলেদের এলান করে দেয় আজ তোমার বাবা অফিসে ( স্টুডিও) যাবে না। রণ রুদ্র হাসে, তারা জানে একটু চাঙ্গা হলেই বেরিয়ে পড়বে বাবা।
তিনি আরও লিখেন, গতকাল বেগমের মন খুব খারাপ থাকায় আমরা চেষ্টা করছিলাম তাকে চিয়ার-আপ করার জন্য। সবাই লক্ষ্মী ছেলে হয়ে ওর কথামতই চলেছি, মেজাজ খারাপ করার সুযোগই দেইনি। রণ রুদ্র আমার ইশারা বোঝে। মা’কে আর যন্ত্রণা দেয়ার চেষ্টাই করে না, কারণ তারা জানে আমি পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করার জন্য সঠিক পদ্ধতিই অবলম্বন করবো।
রণ রুদ্র’র সাথে সারাদিন এটা সেটা নিয়ে বেগমের কাহিনী চলতে থাকে। আমি শুধু অবজার্ভ করি, প্রয়োজনে মাথা ঢুকাই। আজকালকার পোলাপানের তুলনায় আমরা গার্ডিয়ানরা যে স্লো এটা বেগম বুঝতেই চায় না, যতক্ষণ না আমি বুঝাই। যখন আমার উপরে ক্ষ্যাপে তখন তিনজনই চুপ হয়ে যাই। আমার আম্মা এসব ব্যাপারে যথেষ্ট টনটনে স্মার্ট ছিলেন, বেগম সেই তুলনায় একটু কম মেজাজী, অভিমানী বেশী।
পরিবারকে শ্রেষ্ঠ দাবী করে আসিফ আরও লেখেন, এসব কথা লেখার কারণ হচ্ছে পরিবার সম্বন্ধে একটু ধারণা দেয়া। আসলে পরিবার হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে লব্ধ জ্ঞান নিয়েই দুনিয়ায় চলতে হবে। করোনার কারণে অনেকদিন পর বাসায় আমরা একসাথে ডিনার করলাম। রণ বলেছে যতদিন এই ক্রাইসিস থাকবে, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আমরা একসাথেই দিনেরাতে খাবো।
ব্যাপারটা আমারো ভাল লেগেছে, আমিও ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো পরিবারের সাথেই খাবার খেতে।
ছেলেদের সাথে বেগমের লেগে যায়, লিমিট ক্রস করলেই তাদের পুরনো আদেশ মনে করিয়ে দেই। তোমাদের মায়ের সাথে যা খুশি তর্ক করো, আমার বউয়ের সাথে বেয়াদবী করা যাবে না। এভাবেই আমরা আগলে রাখবো আমাদের পরিবারকে।
অশিক্ষা কুশিক্ষার সন্তান বাবা মা পরিবারের মর্যাদা বুঝবে না। যত দিন যাবে পরিস্থিতি করুণ থেকে করুণতর অবস্থায় যেতে থাকবে। এই অভিশপ্ত নাগপাশ থেকে মুক্তি মিলবে না প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।
টাইমস/জেকে