ঝিনাইদহে বিদেশফেরত ৮৩৭ জনের খুঁজে পুলিশ, ১৯ জনের নমুনা ঢাকায়

ঝিনাইদহে বিদেশফেরত ৮৩৭ জনের সন্ধান মিলছেনা। নিখোঁজ ব্যক্তিদের নাগাল পেতে পুলিশের গোয়েন্দারা গ্রাম-গঞ্জে চষে বেড়াচ্ছেন। গত ১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত এ জেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন অন্তত ৪০৭৫ জন। তাদের মধ্যে ৭৩ জন অন্য জেলার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। ৩১৬৫ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১২৮৩ জন, শৈলকুপা উপজেলায় ৭০৯ জন, হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৩৫ জন, কালীগঞ্জ ৯৫৮, কোটচাঁদপুরে ২৯৪ এবং মহেশপুরে ৫২৩ প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরেছেন। কমপক্ষে ৩৫টি দেশ থেকে এসেছেন তারা। তাদের মধ্যে করোনার দেশ ইতালি থেকে ফিরেছেন মাত্র ৩ জন। আমেরিকা থেকে ৩০ জন, চীন থেকে মাত্র ২ জন, আরব-আমিরাত থেকে ১১৬, সৌদি থেকে এসেছেন ১৪৯ জন, ইংল্যান্ড থেকে ৬ জন, ফ্রান্স থেকে ১ জন, সুদান থেকে ১৩ জন, সিঙ্গাপুর থেকে ১২৭, বাহারাইন থেকে ১১৩, মালয়েশিয়া থেকে ২৬২ জন, কুয়েত থেকে ৩১ জন, ওমান থেকে ৪০, ব্রুনাই থেকে ৪ জন, কম্বোডিয়া ১ জন, মিশর থেকে ২ জন, নেদারল্যান্ডস থেকে ৪ জন, তুরস্ক থেকে ৮ জন সহ ৪০৭৫ জন দেশে ফেরত এসেছেন। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশী সংখ্যায় ভারত সফর করে নিজ এলাকায় ফিরেছেন। সেই সংখ্যা কমপক্ষে ৩০২৪ জন বাংলাদেশী। তবে ২৬ মার্চের পরে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কতজন দেশে ফিরেছেন তা জানাতে পারেননি পুলিশের ওই সূত্র।

সূত্র জানায়, বিদেশফেরত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা ব্যক্তিগত তথ্যর ওপর এতো দিন গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে সব কিছুতেই তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসীদের প্রকৃত অবস্থান নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। দেশে ফেরত আসার পরে নানা কৌশলে লুকিয়ে রয়েছেন প্রবাসীরা।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম বলেছেন, যাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা তাদের খুঁজে পাওয়ার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আতংকিত না হয়ে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

এদিকে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেছেন, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার মৃত্যু বরণ করা কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যর নমুনাও রয়েছে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, রোববার নতুন করে এক বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জেলার ৬ উপজেলায় ৩৪২জন বিদেশফেরতসহ ৯৮৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৯২ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ঝিনাইদহে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছেনা। টিসিবির তেল, চিনি, ডাল কিনতে মানুষের ঢল নামছে। পণ্য বহন করা ট্রাকের চার পাশে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করে পণ্য কিনছেন। হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের সময়ও একই চালচিত্র লক্ষ্য করা গেছে। দোকান পাটে ভিড় না থাকলেও হাট বাজারের চিত্র বদল হয়নি।

এ অবস্থায় রোববার সকাল থেকে জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের বিশেষ চেক পোষ্ট বসানো হয়েছে। যানবাহনসহ পথচারী চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

 

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: