রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে উন্নত দেশগুলোর প্রতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। বঙ্গোপসাগরে ভাসমান প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক) লর্ড আহমেদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ফোনালাপের মাধ্যমে একে আবদুল মোমেন এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে এরই মধ্যে আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। ৫০০ রোহিঙ্গা ১১ লাখের তুলনায় খুবই নগণ্য সংখ্যা। এই ৫০০ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশ সীমানায়ও নেই। মানবিক কারণ দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বারবার বাংলাদেশকে অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়াও এ অঞ্চলে আরও দেশ আছে। আপনারা সেসব দেশে কেন অনুরোধ করছেন না? যুক্তরাজ্যের রয়েল জাহাজ এসেও তো এসব রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে আশ্রয় দিতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের উচিত বাংলাদেশে অবস্থানরত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেয়া। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর উচিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে এগিয়ে আসা। এছাড়া এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে।
একে আবদুল মোমেন বলেন, কিছু দিন আগেও তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা আবারও বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে যথেষ্ট সোচ্চার নয়।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বহু মানুষ এখন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যুক্তরাজ্যসহ উন্নত বিশ্বের উচিত মানবিক কারণে তাদের চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়ে সোচ্চার হওয়া। যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা যাতে গার্মেন্ট খাতে বাংলাদেশে ক্রয় আদেশ বাতিল না করেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের সহযোগিতাও কামনা করেন।
এদিকে বঙ্গোপসাগরের কাছে ভাসমান দুটি নৌকায় পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে আরও অনুরোধ আসছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে। জানান একে আবদুল মোমেন।
টাইমস/এসএন/এইচইউ