হাসপাতালের বিল দিতে নবজাতককে বিক্রি, ফিরিয়ে দিল পুলিশ

গাজীপুরে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নিজের নবজাতককে টাকার বিনিময়ে দত্তক দিয়েছেন অসহায় মা-বাবা। পরে খবর পেয়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে সেই নবজাতককে তার মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নবজাতকটির বাবা-মা পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তারা গাজীপুরের এনায়েতপুর এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে কারখানা বন্ধ থাকায় তারা দুই মাস ধরে বেতন পাননি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবু লাইচ মো. ইলিয়াস জিকু জানান, গত ২১ এপ্রিল গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় সেন্ট্রাল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি হন কেয়া খাতুন (২০)। ওই দিন সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। এটি কেয়া খাতুন ও শরীফ হোসেন দম্পতির প্রথম সন্তান। হাসপাতালে ১১ দিন ভর্তি থাকায় বিল আসে ৪৭ হাজার টাকা। হাসপাতালের এ বিপুল পরিমাণ বিল স্বামী শরীফের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব ছিল না।

পরে কেয়া খাতুন ও তার স্বামী শরীফ হাসপাতালের বিল দিতে না পারায় নিজের সন্তানকে প্রতিবেশী এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। সন্তান বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন। শুক্রবার (১ মে) তারা সন্তানকে বিক্রি করে দিয়ে নগরীর কাশিমপুর এলাকার এনায়েতপুরে তাদের বাড়িতে চলে যান। পরে বিষয়টি পুলিশের এডিশনাল আইজির (এসবি) মাধ্যমে খবর পান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নিজেই হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে দিয়ে ওই নবজাতককে তার মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে খবর পেলে শিশুটিকে দত্তক দিতে হত না। হাসপাতালের বিল আমি পরিশোধ করে দিতাম। পরে দত্তক নেওয়া দম্পতিকে ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে নবজাতকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শিশুটির লালন-পালনের জন্য তাদের আরও পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: