করোনা সন্দেহে হাসপাতালে গিয়ে আগুনে পুড়ল সংসারের হাসি!

রিয়াজুল আলম লিটন গুলশানের একটি বায়িং হাউজের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। জ্বর জ্বর ভাব হওয়ায় করোনা সন্দেহে সহকর্মীরা তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয় লিটনকে। পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে তার তবে লাশ হয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে। বুধবার রাতের আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে লিটনের। বৃহস্পতিবার ভোরে স্বজনরা তার লাশ গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ নিয়ে যান।

রিয়াজুল আলম লিটনের বড় ভাই রইসুল আজম ডাবলু জানান, তার ভাই স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার জেমি ও সাত বছরের একমাত্র সন্তান আসমাইন ফিয়াজকে নিয়ে শ্যামলী এলাকায় থাকতেন। বিদেশি একটি বায়িং হাউজের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন লিটন। বুধবার অফিসে যাওয়ার পর শরীরে তাপমাত্রা একটু বেশি হওয়ায় করোনা পরীক্ষা করতে তিনি হাসপাতালে যান। বিকাল ৩টার দিকে তার শরীর থেকে নমুনা নিয়ে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। আমরা অপেক্ষা করছিলাম করোনা পরীক্ষার ফলাফলের জন্য। ফলাফল ঠিকই নেগেটিভ এলো। কিন্তু ভাই আমার বাঁচলো না। তাকে আগুনে পুড়ে মরতে হল।

লিটন জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর থেকে তিনি ঢাকায় থেকে বায়িং হাউজ ব্যবসা করতেন। তিনি লায়ন্স ক্লাব অব দিনাজপুরের সাবেক সেক্রেটারি এবং ঢাকাস্থ বীরগঞ্জ সমিতির উপদেষ্টা ছিলেন।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান বুধবার রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ইউনিটে এয়ার কুলার মেশিনে শট সার্কিট হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়। আইসোলেশন ইউনিটে অনেক দাহ্য পদার্থ ছিল। এই কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে সেখানে থাকা পাঁচ জন রোগীর মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে তিন জন করোনা পজিটিভ ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

টাইমস/জেকে

Share this news on: