করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাস্কের সঙ্গে চশমাও কি দরকার?

আমরা ইতিমধ্যে সবাই জানি যে, নাক বা মুখ দিয়ে করোনাভাইরাস দেহে প্রবেশ করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নাক ও মুখের পাশাপাশি হাত না ধুয়ে চোখ স্পর্শ করতেও বারবার নিষেধ করছেন। এমন অবস্থায় অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে সত্যিই কি চোখ দিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া সম্ভব?

যদি সত্যিই চোখ দিয়ে করোনা সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা থাকে তাহলে চোখ স্পর্শ না করলেও বাতাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নাক ও মুখে মাস্ক পরার পাশাপাশি চোখের নিরাপত্তা চশমা ব্যবহার করাও জরুরি হয়ে দাঁড়াবে।

ভাইরাস বিশেষজ্ঞ জোসেফ ফেয়ার (পিএইচডি) কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে জটিল পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। যাত্রী বোঝাই প্লেনে করে যাতায়াতের সময় তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে তার ধারণা। যেখানে তিনি মাস্ক ও গ্লভস পড়েছিলেন কিন্তু চোখের নিরাপত্তায় কিছু ব্যবহার করেননি।

হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার ধারণা এটি চোখ দিয়ে আমাকে আক্রান্ত করেছে। আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন যে ঝুঁকি এড়াতে মাস্কের পাশাপাশি চোখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জরুরি কিনা? তাহলে আমার উত্তর হচ্ছে- অবশ্যই জরুরি।”

তবে এই বিষয়ে চোখের উপর করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ে গবেষণারত যুক্তরাষ্ট্রের বেথেসদা ন্যাশনাল আই ইন্সটিটিউটের ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেটর এইচ নিদা সেন জানিয়েছেন তিনি এখনও এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন। তিনি বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে এটি একশো ভাগ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছি না। তবে, জৈবিকভাবে এটি হওয়া সম্ভব।”

বাল্টিমোরের জন হপকিনস স্কুল অব মেডিসিনের অপথালমোলজির প্রফেসর ইলিয়া ডাহ এর মতে, এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “অন্য অনেক ভাইরাস যেমন সাধারণ সর্দি এবং হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত অ্যাডেনোভাইরাসগুলি চোখ দ্বারা দেহে প্রবেশ করতে সক্ষম। তাই করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমন সম্ভাবনা আপনি উড়িয়ে দিতে পারেন না।”

তিনি আরও বলেন, “যখন কোনো করোনা আক্রান্ত রোগীর হাঁচি, কাশি বা কথা বলার মাধ্যমে করোনা ডপ্লেট (ক্ষুদ্রতম কণা) ছড়িয়ে পড়ে তখন তার আশেপাশে থাকা মানুষের চোখ ও নাক একেবারেই অরক্ষিত একটি স্থান, যা দ্বারা ভাইরাসটি প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও মানুষ ঘন ঘন তাদের চোখ স্পর্শ করে, তাই এক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।”

এই বিষয়ে ডাহ এবং তার সঙ্গীদের করা গবেষণাটি এখন পীর রিভিউয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সেটি প্রকাশিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে চলমান লক ডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত সতর্কতার অভাবে রোগটিতে আক্রান্ত হবার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি.কম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: