শৈশবের স্থূলতা মূত্রথলি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়

পৃথিবীব্যাপী দেখা দেয়া বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে সংখ্যায় নবম স্থানে রয়েছে মূত্রথলির ক্যান্সার রোগী। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ফিরে আসার হার যেমন বেশি, তেমনি ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষকেই রোগটি বেশি আক্রমণ করে।

গবেষণা বলছে শৈশবে যেসব শিশুর অতিরিক্ত ওজন থাকে, পরিণত বয়সে তাদের মূত্রথলিতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে। ‘অ্যানালস অফ হিউম্যান বায়োলজি’ শীর্ষক সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন দাবি করা হয়।

ডেনমার্কের ‘বিসপেজার্গ অ্যান্ড ফ্রেডরিস্কবার্গ হসপিটালের ডা. ক্যাথরিন কে. সোরেনসেন এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। গবেষণায় ডেনমার্কের ৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৬৩জন শিশুর তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়, যাদের জন্ম হয়েছিল ১৯৩০ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে এবং ওই সময়ে তাদের বয়স ছিল সাত থেকে ১৩ বছর।

এতে দেখা যায়, শারীরিক স্থূলতা পরবর্তী জীবনে নানান রোগ বয়ে আনে। শৈশবে ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হওয়া, জন্মের সময় ওজন কম কিংবা বেশি হওয়া এবং উচ্চতা গড় স্বাভাবিকের তুলনায় কম হওয়ারও ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া ডা. ক্যাথরিন কে. সোরেনসেন বলেন, “আমাদের গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত করে যে, শিশুর ওজন যত বেশি হবে ভবিষ্যতে তার মূত্রথলির ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও ততই বাড়তে থাকবে। শৈশবে শারীরিক গড়ন পরবর্তী জীবনের কী রকম প্রভাব ফেলে তা জানতে বড় ধরনের সহযোগিতা করবে আমাদের গবেষণাটি, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।”

তিনি আরও বলেন, জীবনের প্রাথমিক সময়ে দেখা দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ উপসর্গগুলো সনাক্ত করতে পারলে প্রাণঘাতী মূত্রথলির ক্যান্সারকে আরও গভীরভাবে জানা সম্ভব।

ভবিষ্যতে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বোঝাতে গিয়ে গবেষকরা বলেন, “ধরা যায় একজন ১৩ বছর বয়সি ছেলের কথা যার উচ্চতা পাঁচ ফুট এবং তার ‘বডি ম্যাস ইনডেস্ক’য়ের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৫.৯ কেজি বেশি। ছেলেটির পরিণত বয়সে মূত্রথলিতে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। একই বয়সের আরেকটি ছেলে যে আগের ছেলেটির চাইতে তিন ইঞ্চি বেশি লম্বা, তার জন্য ঝুঁকি কমে দাঁড়াবে ছয় শতাংশে।

এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক ডা. জেনিফার এল. বেকার বলেন, “সহজ করে বলতে হলে, পাঁচ ফুট উচ্চতার দুইজন ১৩ বছর বয়সি ছেলের ওজন যদি ৪২.৫ কেজি ও ৪৮.৪ কেজি হয়, তবে যার ওজন বেশি তার মূত্রথলির ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ শতাংশ বেশি।”

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: