মৌসুমি বায়ু যথাসময়ে বাংলাদেশে চলে আসায় একদিকে যেমন বর্ষা শুরু হয়ে গেছে, অন্যদিকে তেমনি পঙ্গপালের হানা দেয়ার আশঙ্কাও কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র এক আলোচনা সভা থেকে এমন স্বস্তির খবর দেয়।
সভায় জানানো হয়, ফসলবিনাশী পতঙ্গ পঙ্গপাল সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়ায় বংশবিস্তার ও চলাচল করতে পারে। কিন্তু মৌসুমি বায়ুর কারণে বাতাস জলীয়বাষ্পপূর্ণ হওয়ায় এবং বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় পতঙ্গের দল ভারতের মধ্যাঞ্চল থেকে পূর্বের রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হতে পারেনি। পতঙ্গের দলটি ভারতের মধ্যাঞ্চল থেকে পাকিস্তান সীমান্তের দিকে চলে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সভায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার জ্যেষ্ঠ পঙ্গপাল পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা কেথ ক্রিসম্যান মূল বক্তব্য তুলে ধরেন। অনলাইনে আয়োজিত ওই সভায় বাংলাদেশের কৃষি বিশেষজ্ঞ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কেথ ক্রিসম্যান বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশকে এই দফায় পঙ্গপালের হামলা থেকে রক্ষা করে দিয়েছে। পঙ্গপাল সাধারণত মরুভূমি এলাকার পতঙ্গ। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এটি চীন হয়ে পাকিস্তান দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখানকার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের রাজ্যগুলোর ফসলের ক্ষতি করে।
ক্রিসম্যান বলেন, পতঙ্গের দল দ্রুত ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ওডিশার দিকে এগোচ্ছিল। সেখানকার ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এর দ্রুত বিস্তার লাভের আগেই মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছে গেছে। ওই বাতাস পঙ্গপালের জন্য প্রতিকূল আবহাওয়া তৈরি করেছে। ফলে তাদের বাংলাদেশে আসার আশঙ্কা খুবই কম।
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, পঙ্গপালের গতিবিধি সম্পর্কে সভা থেকে যে তথ্য জানা গেল, তা সরকারের কৃষিবিষয়ক পরবর্তী পরিকল্পনা তৈরি করতে সহযোগিতা করবে। তবে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহায়তায় সরকার নিয়মিত পঙ্গপালের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে যাবে।
এফএও বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রবার্ট ডি সিম্পসন বলেন, এফএও থেকে বিশ্বজুড়ে পঙ্গপালের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় এই পতঙ্গের অবস্থান নিয়মিত তদারকি করা হবে।
টাইমস/জিএস