ধর্মবিশ্বাস নিয়ে দ্বন্দ্ব: কবর থেকে তুলে ফেলা রাখা হলো শিশুর লাশ

স্বপ্না বেগম। তিনি ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। গত ৭ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। স্বপ্নার বাবার বাড়ি ঘাটুরা গ্রামে। কয়েক মাস ধরে তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। নির্ধারিত সময়ের আগে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ায় শিশুটিকে হাসপাতালে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিশুটি মারা যায়। পরে ধর্মীয় রীতি মেনে সকাল ৭টার দিকে শিশুটির লাশ ঘাটুরা এলাকার একটি সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু আহমদীয়া সম্প্রদায়ের হওয়ায় দাফনের ঘণ্টা দেড়েক পর মাইকিং করে লাশ কবর থেকে তোলার জন্য লোকজন জড়ো করা হয়। এরপর লাশ কবরস্থানের বাইরের রাস্তায় পাওয়া যায়।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামে। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি জানা যায়নি।

পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পাহারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় নিজ সম্প্রদায়ের নিজস্ব কবরস্থানে পুনরায় শিশুটির লাশ দাফন করা হয়।

শিশুটির বাবা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মাইকিং করে আহমদীয়া সম্প্রদায় বিরোধীদের জড়ো করা হয়। এরপর তার সন্তানের লাশ কবর থেকে তুলে কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের বাইরের রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘাটুরার কবরস্থানটিতে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের লাশ অনেক আগে থেকেই দাফন হয়ে আসছে। কোনো আপত্তি থাকলে তারা আমাদের বলতে পারত। কিন্তু দুইদিনের একটা শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে ফেলে দিবে এটা কল্পনাও করা যায় না।

এ বিষয়ে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হাজারী আঙ্গুর বলেন, গ্রামের বাসিন্দা এবং হুজুররা বাধা দিয়েছেন। আহমদীয়া সম্প্রদায়ের কাউকে কবর দেওয়া যাবে না। আমরা গিয়ে দেখি ওই শিশুর লাশ কবরস্থানের বাইরে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, কবর থেকে শিশুর লাশ তোলারর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। দুই পক্ষ বিষয়টি সমাধান করে ফেলেছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: