ঢাবিসহ সারাদেশে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীসহ সিলেট এমসি কলেজ, খাগড়াছড়িতে ধর্ষণ এবং সাভারে কিশোরী হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরও গ্রেপ্তারে দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী।

সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, কোনো কিছু না করার পরও দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ এবং শিক্ষক সমাজ সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় বারবার ছাত্রলীগকে দোষারোপ করছে। তাদেরকে বলি, এতে ছাত্রলীগের কিছু যায় আসে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিয়ে যাদের এত চুলকানি, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি এই ধর্ষকের তো কোনো দল থাকবে না। তারা এই পৃথিবীতে কলঙ্কিত। এই ধর্ষক নিকৃষ্ট কুলাঙ্গার প্রাণীরা যে দলেরই হোক না কেন তাদের কঠোর বিচার করতে হবে।

ঢাবি শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, যখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করেন তখনই ধর্ষণের মেগা সিরিয়াল বাস্তবায়ন করছে একদল। যেখানে একটি ধর্ষণের বিচার হবে সেখানে পরপর এতগুলো ধর্ষণ কীভাবে হয়?

নুরুল হক নুর বাঁচার জন্য পরিকল্পনামাফিক বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে দায়ী করতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, নুরা পাগলাকে (ভিপি নুর) আইনি সহযোগিতা ও তাকে নিয়ে রাজনৈতিক দল খোলার আগে জাফরুল্লাহ ও কামাল হোসেনের উচিত মানসিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তার (নুর) মানসিক চিকিৎসা করানো।

ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ধর্ষণের ঘটনাকে যারা রাজনৈতিক মোড়কে ঢেকে দিতে চায়, পপুলিস্ট প্রপাগান্ডা (জনপ্রিয় প্রচারণা) দিয়ে ধর্ষিতার আর্তনাদকে ভেঙে দিতে চায় তাদের কালোহাত ভেঙে দিতে হবে। যারা গণতান্ত্রিক মোড়ক দিয়ে ধর্ষককে রক্ষা করতে চেয়েছেন সে সিভিল সোসাইটির প্রতি আমরা বলে দিতে চাই, সে সিভিল সোসাইটি এখন আর সিভিল সোসাইটি নেই। সে সিভিল সোসাইটির অনেকেই ডেভিল অ্যাডভোকেটে পরিণত হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ এই ডেভিল সোসাইটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত রয়েছি।

প্রসঙ্গত, এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ধর্ষণ ও এতে সহযোগিতার অভিযোগ এনে মোট ছয়জনকে আসামি করে লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রী। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে। এর মধ্যে ধর্ষণে সহযোগিতাকারী হিসেবে ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য চার আসামি হলেন- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক (২) মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।

এদিকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে ঘুরতে যান এক তরুণী। ওই সময় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মী স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করে।

অন্যদিকে বুধবার মধ্যরাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বলপাইয়া আদাম গ্রামে এক পাহাড়ি পরিবারের বাড়িতে ঢুকে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে (২৬) দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: