অতি গরমের প্রভাবে পড়েছে কাঁচা বাজারে। ঈদের পর দাম কিছুটা কমলেও গরমের প্রভাবে আবারও দাম বেড়ে গেছে, ফলে গরমের ভোগান্তির চেয়েও বাড়তি দাম ভোগাচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের প্রভাবে ফসল নষ্ট হওয়া, ফসল ভালো রাখতে বেশি পরিমাণে সেচ দেওয়াসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং তীব্র রোদের কারণে ফসল কম তোলায় রাজধানীতে সরবরাহ কিছুটা কম গেছে বলেই সবজির দাম বাড়তির দিকে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এছাড়া গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সব ধরনের মুরগির দামও বাড়তির দিকে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ষাটোর্ধ্ব আহমুদা আক্তার সবকিছুর দাম বাড়তির দিকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মানুষ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে বাজারে এসে। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলুর দাম যেমন বাড়তির দিকে তেমনি শাক সবজির দামও কমেনি। সব কিছুর দাম বাড়তির দিকে। পরিবারে যাদের ৪ থেকে ৫ জন সদস্য রয়েছেন তাদের জন্য খুবই অসুবিধা হচ্ছে।
অতীতের সঙ্গে বর্তমানের বাজারের দামের তুলনা দিয়ে এই ষাটোর্ধ্ব নারী আরও বলেন, ‘আগে এক হাজার টাকা নিয়ে এলে আদা, রসুন, পেঁয়াজ সব কেনা যেতো; এখন তিন হাজার টাকা নিয়ে এলেও তেমন কিছুই কেনা যায় না। চৈত্র মাস চলে আসছে। এখন তো দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু কমতেছে না।’
গাড়ি চালক হিসেবে কাজ করেন মো. বেলাল হোসেন। নিজের সীমিত আয়ে বাজার করতে কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের পর দাম একটু কমছিলো। কিন্তু আবারও সবকিছুর দাম বাড়ছে। সবজির দামও বেশি। পেঁয়াজ কিনলাম এর দামও বাড়ছে। আমাদের চলা অনেক কষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে পেঁয়াজ বিক্রেতা মোর্শেদ আলী বলেন, পেঁয়াজ জমি থেকে উঠিয়ে ঘরে মজুত করে রাখছে কৃষকরা, পরে বেচবো। তিনি জানান, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দর ছিল প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৩ টাকা আর এই সপ্তাহে বিক্রি করছি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা দরে।
মরিচের দামও বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। মরিচের কেজি গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৬০ টাকা হলেও এই সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, ছোট আকারের ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, টমেটো কেজি প্রতি ৫০ টাকা, করোলা ৬০ টাকা এবং গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তির দিকে। প্রতি কেজি দেশি মুরগির দাম ৭১০ টাকা, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২৩০ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি প্রতি দাম ৩৮০ টাকা।
অন্যদিকে, গরু এবং খাসির মাংসের দামও কমেনি। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, মাংসের চাহিদা সব সময় থাকে। ফলে শীত এলেও দাম কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে মাংসের দাম। এছাড়াও ফসলের ক্ষেতে আগের তুলনায় গরমের কারণে বেশি সেচ দিতে হচ্ছে ফসল ভালো রাখার জন্য। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। রাজধানীতে সরবরাহ কিছুটা কমেও গেছে। সব মিলিয়ে দাম বাড়তির দিকে।