চট্টগ্রামে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল উঠতি মডেলের লাশ

মডেলিং করে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন ছিল ১৯ বছরের তরুণী মাহি’র। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে চট্টগ্রামের একটি ‘মডেলিং এজেন্সি’র সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কয়েকটি ফটোসেশনেও অংশ নিতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না। হঠাৎ নিজের বাসায় সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল তার লাশ।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে নিজের কক্ষের ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন মাহি। ঘটনা টের পাওয়ার পর ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে মাহিকে নেয়া হয় আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাহির গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তবে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে নানার বাড়িতে থাকতেন ও নগরীর একটি কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামের উইন্ডোজ মাল্টিমিডিয়া নামে একটি কথিত মডেলিং এজেন্সিতে মডেলিং করতেন। নগরীর মেহেদীবাগ ন্যাশনাল হাসপাতালের পাশের একটি ভবনের তৃতীয় তলায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালায় বলে তাদের ফেসবুক পেজ থেকে জানা গেছে।

মডেলিংয়ের সূত্রে এ সময় নাসিরাবাদ এলাকার এক ছেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন মাহি। এমন কথা নিশ্চিত করে উইন্ডোজ মাল্টিমিডিয়া নামের ওই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িত এক তরুণ জানিয়েছেন, সম্প্রতি সেই সম্পর্ক ভেঙে গেছে বলে আমরা শুনেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাহির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু জানান, শোবিজ মিডিয়ায় অবস্থান পাকাপোক্ত করতে গিয়ে মাহি একপর্যায়ে মাদকসেবনের সাথে জড়িয়ে যায়। তার সঙ্গে কয়েকটি ছেলের সম্পর্কও ছিল। তার পরিবার বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ঘরের বাইরে যেতে দিতো না।

এ বিষয়ে মাহির মামা ঢাকার ডেমরা থানার ওসি তদন্ত মো. সেলিম বলেন, মাহি এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। খুব শান্ত ও ভালো মেয়ে। রাগটা একটু বেশি। আমার বাবার (মাহির নানা) কাছে বান্ধবীর বাসায় যেতে দিতে বলেছিল। কিন্তু তার বাবা করোনার মধ্যে ঘরের বাইরে যেতে মানা করার পর সে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এর একপর্যায়ে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে কোনও সাড়া না পেয়ে পরিবারের অন্যরা দরজা ভেঙে দেখে মাহি ফ্যানের সাথে ঝুলছে।

তিনি বলেন, মাহির আত্মহত্যা নিয়ে আমাদের কারও কাছে কোনো অভিযোগ নেই। যার জন্য আমরা মামলায় কারও দোষ নেই বলে উল্লেখ করেছি। অনেকে অনেক কথা বলছে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দিয়ে। তারা মূলত আত্মহত্যার ঘটনাটিকে অন্যদিকে মোড় দেওয়ার চেষ্টায় এমন কথা রটাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার জিইসি মোড়ে এক বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য নানাকে বলেছিল সে। কিন্তু তার নানা যেতে মানা করায় রুমে গিয়ে অভিমান করে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: