মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার

সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের মূলহোতা স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবদুস সালাম প্রশ্নফাঁস করে তার খালাতো ভাই জসিম উদ্দিন মুন্নুকে সরবরাহ করতেন। মাস্টারমাইন্ড জসিমের হাত ঘুরে এসব প্রশ্নপত্র বিপুল টাকার বিনিময়ে ছড়িয়ে যেতো সারাদেশে।

এর আগে সোমবার রাতে সিআইডি পুলিশের একটি টিম রাজধানীর বনশ্রীর জি-ব্লক থেকে আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করে।

সম্প্রতি গ্রেপ্তারের পরে জসিম উদ্দিন মুন্নু এধরণের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তবে প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা ছিলেন আবদুস সালাম। যিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান। তবে এই চক্রের সঙ্গে বেশ কয়েকটি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি কোচিংয়ের শিক্ষক জড়িত রয়েছে। সেই সঙ্গে অসাধু কয়েকজন চিকিৎসকদের নামও বেরিয়ে আসছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এসময় সিআইডির সাইবার পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম বলেন, ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সন্ধান পায় সাইবার পুলিশ। ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এসএম সানোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর সিআইডিকে এসংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন- সিআইডির সাইবার পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সানোয়ারের তথ্যের সূত্র ধরে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের অন্যতম হোতা জসিম উদ্দিন মুন্নুসহ জাকির হোসেন দিপু ও পারভেজ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়।

সিআইডি কর্মকর্তা আশরাফুল আরও জানান, প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে কী পরিমাণ সম্পদ তারা গড়েছেন আমরা এখন সেগুলো তদন্ত করছি। মানি লন্ডারিং মামলার প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে তদন্ত করছি। এরই মধ্যে আসামিদের নামে-বেনামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য পেয়েছি।

আশরাফুল আলম বলেন, গত ২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় মামলা করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। ওই তদন্তেই মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের হোতা আবদুস সালামের নাম বেরিয়ে আসে।

আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করতে ছদ্মবেশ নেয়া লেগেছে জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে এখন অনেকেই চিকিৎসক। মামলার তদন্ত শেষে এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। যারা প্রশ্নপত্র কিনেছেন, তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: