চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও ‘প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার’ ঘর জুটলো না নাজমার (৫৫) ভাগ্যে। ঘুষ দিয়েও সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর না পাওয়ায় অবশেষে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় আত্মহত্যা করেন গুচ্ছগ্রামের রজব আলীর স্ত্রী নাজমা। কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা জানায়, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার সরকারি ঘর বরাদ্দ পাওয়ার জন্য গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার আবদুর রশিদের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেবকে ৫০ হাজার টাকা দেন নাজমা। এ বিষয়ে গজারিয়ার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও নাজমা কোনো সুরাহা পাননি। এমনকি সরকারি বরাদ্দের ঘরও পাননি গৃহহীন নাজমা পাগলী। এসব ঘটনায় মনের কষ্টে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তালেব গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। গত সোমবার সে আমার কাছে এসেছিল। আমার সঙ্গে ঘরের জন্য ঝগড়াও করে গেছে নাজমা। শুনেছি ছেলের সঙ্গে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
গুচ্ছগ্রামের মোজাম্মেল জানান, ঘরের জন্য নাজমা ওরফে পাগলী ৫০ হাজার টাকা গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তালেবকে দিয়েছিলেন বলে শুনেছি। কিন্তু নাজমা ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় তার ছেলে নুরে আলম তাকে বকাঝকা করেছে।
উপজেলা পিআইও তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, নাজমা একাধিকবার এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম ইমাম রাজী টুলু ও আমার কাছে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়ার জন্য আসেন। বিষয়টি মর্মান্তিক। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি আমার কাছে একাধিকবার এসেছেন কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি।
এ বিষয়ে বিআরডিবির চেয়ারম্যান বাবুল আখতার জানান, চেয়ারম্যান আবু তালেব প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে রশিদ মেম্বারকে নাজমা পাগলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিতে বলেন। সেই কথা অনুযায়ী রশিদ মেম্বার নাজমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টাইমস/এসএন