বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, বয়ফ্রেন্ডের মৃত্যু!

রাজধানীর মোহম্মদপুরে এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রী ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে পড়াশোনা করতেন। বয়ফ্রেন্ডসহ বন্ধুদের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে গিয়ে অসুস্থ হন ওই ছাত্রী। ধারনা করা হচ্ছে বন্ধুদের নিয়ে মদপানের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী ও তার বয়ফ্রেন্ড অসুস্থ হয়ে যান। ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ তার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ওই অভিযোগে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় বয়ফ্রেন্ডসহ ৫ বন্ধুকে আসামি করা হয়েছে। এঘটনায় ওই ছাত্রীর দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

এদিকে অতিরিক্ত মদপানের কারণে বিষক্রিয়ায় ওই ছাত্রীর বয়ফ্রেন্ডের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তার শরীরের বিষক্রিয়ার আলামত ছিল। বয়ফ্রেন্ডের মৃত্যুর একদিন পর রোববার মারা যান ইউল্যাবের ওই ছাত্রী। তার শরীরেও বিষক্রিয়ার আলামত ছিল। পুলিশের ধারণা মারা যাওয়ার আগে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। মদপানে বিষক্রিয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন। কারণ তাদের শরীরে বিষক্রিয়ার আলামত ছিল।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবদুল লতিফ বলেন, শুক্রবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বন্ধুদের সঙ্গে উত্তরার একটি রেঁস্তোরায় যান। সেখানে অসুস্থবোধ করলে তাকে বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শনিবার তাকে আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ওই ছাত্রী মারা যান। এঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণের মামলা করেছেন। মামলা পর ওই ছাত্রীর দুই বন্ধু কেকো ও তাফসিরকে গ্রেফতার করে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুণ অর রশিদ বলেন, ওই ছাত্রীর দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষণের পাশাপাশি বিষক্রিয়ায় ওই ছাত্রীর মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তেজগাঁও জোনের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই ছাত্রী তার বয়ফ্রেন্ড রায়হানকে নিয়ে উত্তরার একটি রেঁস্তোরায় যান। সেখানে খাওয়া দাওয়ার পর মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদীয় হোমস নামে আবাসিক এলাকায় ওই ছাত্রীকে বন্ধু তাফসিরের বাসায় নিয়ে যান বয়ফ্রেন্ড রায়হান। সেখানে আমোদ-ফুর্তির একপর্যায়ে তারা মদপানও করেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে রায়হানকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ছাত্রীকে অপর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রায়হান। তার শরীরে বিষক্রিয়ার আলামত ছিল। এদিকে রোববার মারা যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী। তিনি আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুর আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার বয়ফ্রেন্ডের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে বিষপান নাকি মদপানের কারণে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডিএমপি জনসংযোগের ডিসি ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ওই ছাত্রীর ছেলেবন্ধু রায়হান বিষক্রিয়ায় শনিবার মারা গেছেন। আর ওই ছাত্রী মারা গেছেন রোববার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনায়েত হোসেন শেখ বলেন, শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে তার দুই বান্ধবী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার রক্তচাপ ছিল খুবই কম, পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্রুত তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।

ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, অসুস্থ মেয়েকে বন্ধুর বাসায় নিয়ে গিয়ে আবারও ধর্ষণ করা হয়। এ সময় তার মেয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সে মারা যায়। এঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে ৫ জনের নামে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় তিনি মামলা করেছেন।

টাইমস/জেকে

Share this news on: