দিল্লিতে অক্সিজেন সংকটে বোন, ফেসবুকে যা লিখলেন ফারিয়া

বাংলাদেশি অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার বড় বোন বন্যা ভারতের দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎিসাধীন অবস্থায় অক্সিজেন সংকটে পড়েছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন শবনম ফারিয়া। বাংলাদেশি অভিনেত্রীর বোন এমন সময় ভারতে অক্সিজেন সংকটে পড়েছেন, যখন করোনার ভয়াল ছোবলে লণ্ডভণ্ড ভারত। এরই মধ্যে দেশটিতে অক্সিজেন সংকটে অসংখ্য করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে শবনম লিখেছেন, ‘আমার বড় বোন আমার ১৬ বছর আর মেজো বোন প্রায় ১২ বছরের বড়! আমার সারাজীবন কষ্ট ছিল, অন্যদের বোনদের সঙ্গে যেমন বন্ডিং থাকে আমার নাই! ইনফ্যাক্ট আমার বড় দুই বোনের নিজেদের মধ্যে যেই বন্ডিং সেটা আমার সঙ্গে নাই! আমার বয়স যখন সাড়ে তিন, বড় আপুর তখন বিয়ে হয়ে গেছে। ৫ বছর বয়সে ছোট আপু পড়ালেখার জন্য বাসার বাইরে। তারপরতো বিয়েই হয়ে গেল আপুর! আমি সেভাবে কখনো আমার বোনদের সঙ্গে থাকি নাই। বরং আমার ভাগনে-ভাগনি আমার বন্ধু।

বয়সে যুগের পার্থক্য থাকায় আমার সঙ্গে ওদের একটা জেনারেশন গ্যাপ সব সময়ই প্রকট! তার ওপর তাদের সব সময় মনে হতো ‘ভালো ফ্যামিলির মেয়েরা মিডিয়াতে কাজ করে না’, এইটা নিয়ে আমার দুঃখের সীমা-পরিসীমা নাই! কখনো উৎসাহ দূরের কথা, পারলে দুই-চারটা কথা শোনানোর সুযোগ পেলে মিস করে না! কষ্টের ওপর ডাবল কষ্ট!

কিন্তু পরশু আমার বড় আপু যখন বলল, ‘তৃপ্তি আমার খুব কষ্ট হচ্ছে’ আমি জানি ফোনটা রেখে আমি কতক্ষণ হাউ-মাউ করে কাঁদছি! আমার মেজোবোন কল করে কাঁদতে কাঁদতে যখন বললো, ‘তৃপ্তি আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে, আমি এতো মানুষকে খাওয়াই, আমার বোন বিদেশে শুয়ে খাওয়ার কষ্ট পাচ্ছে’। কী বলে আমার বোনকে সান্তনা দিবো?

শবনম ফারিয়া আরও লিখেছেন, ‘আমার বাবা ডাক্তার ছিলো। সবার সব অসুস্থতায় বাবার কাছে আসতো! আজকে দিল্লিতে আমার বোন অক্সিজেনের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে! আমরা হেল্পলেস, কিছু করার নাই।

আমরা পরশু পর্যন্ত মায়ের কাছ থেকে পুরা বিষয়টা গোপন করে রেখেছি। কালকে মেজো বোন বললো, ‘তৃপ্তি আম্মু দোয়া করলে যদি বন্যা ভালো হয়ে যায়, চল আমরা আম্মুকে জানাই’।

গত দুদিন আমার মায়ের মুখের দিকে তাকানো যায় না। তার বড় মেয়ে, ১৮ বছর বয়সে তার মেয়ে হইসে। যখন সে নিজেই বাচ্চা...। সেই মেয়ের এই অবস্থা তো তার সহ্য হয় না। তাও এতো দূরে এখন!

ফারিয়া আরও লেখেন, আমরা আসলে কাছের মানুষদের ওপরই বেশি অভিমান করি, কষ্ট পাই, রাগ করি। আর সম্ভবত সেজন্যেই তারা কাছের মানুষ! দূরের মানুষের সাথে আর কিসের রাগ! কিন্তু কিছু ঘটনা আছে, তখন বুঝতে পারি আমাদের জীবনে তারা কত স্পেশাল, তাদের আমরা কত ভালোবাসি, তারা কত কিছু করে আমাদের জন্য...। সবার কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা দোয়া করার সময় আমার বড় আপুর কথা একটু স্মরণ করবেন। ঢাকায় বসে আসলে দোয়া করা বা দোয়া চাওয়া ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: