কি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে?

গবেষকদের ধারণা মতে, এই শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বের যেকোনো দেশে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে ক্যান্সার বিবেচিত হবে। আর একারণেই ক্যান্সার প্রতিরোধ বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম একটি লক্ষ্য।

ক্যান্সার বা অন্য যেকোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস বা বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলি বিষয়ের সম্মিলিত প্রভাব থাকে, যার মধ্যে আমাদের খাদ্যাভ্যাস একটি। তবে খাবার আর ক্যান্সারের মধ্যকার সম্পর্ক বেশ জটিল।

ক্যান্সার ও খাদ্যের সম্পর্ক নিয়ে বর্তমানে বেশকিছু গবেষণা চলমান এবং এই বিষয়ে অনেক তথ্যই এখনও স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে ইতিমধ্যে প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফল থেকে ধারণা করা যায়, কিছু কিছু বিশেষ খাবার আমাদের ক্যান্সার আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

প্রক্রিয়াজাত মাংস ও রেড মিট
রেড মিট বা লাল মাংস বলতে সাধারণত গরু, মহিষ ও খাসির মাংস বা এ জাতীয় লাল মাংসকে বোঝায়। এই জাতীয় মাংস গ্রহণের পরিমাণের সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) একটি গবেষণায় প্রক্রিয়াজাত মাংসকে ‘ক্যান্সারের সম্ভাব্য কারণ’ এবং অপ্রক্রিয়াজাত লাল মাংসকে ‘ক্যান্সারের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৬০ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং ১৫০ গ্রাম রেড মিট কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করে।

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ
উচ্চ লবণযুক্ত খাবার বা বেশি লবণ খাওয়ার অভ্যাস ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিশেষত একারণে পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বেশি লবণ গ্রহণ করলে হ্যালিকোবেকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই সংক্রমণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধির সম্ভাব্য কারণ সমূহের একটি।
এছাড়া উচ্চ লবণযুক্ত খাবার এন-নিট্রোসো কম্পাউন্ডের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা আইএআরসি কর্তৃক স্বীকৃত ক্যান্সারের সম্ভাব্য ঝুঁকি বৃদ্ধিকারী উপাদান।

গরম পানীয়
আমরা সাধারণ চা-কফি এরকম বিভিন্ন ধরণের গরম পানীয় পান করে থাকি। অতিরিক্ত গরম পানীয় গ্রহণ করাও হতে পারে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার একটি কারণ। আইএআরসি এর মতে ৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা তার থেকে বেশি গরম পানীয় গ্রহণ করা উচিৎ নয়, এতে করে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
২০১৫ সালে ৩৫টি গবেষণার উপর পরিচালিত একটি রিভিউ থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত গরম পানীয় দক্ষিণ আমেরিকান ও এশিয়ানদের মধ্যে অ্যাসোফাজিল ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

এছাড়াও অতিরিক্ত শর্করা সমৃদ্ধ (হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) খাবার, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রভৃতি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে ধূমপান ত্যাগ, অ্যালকোহল গ্রহণ হ্রাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত শরীরচর্চা প্রভৃতি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি হ্রাস করে।

তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

টাইমস/এনজে

Share this news on: