রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাব

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আরেকটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি নিপীড়িত এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব দিতে দেশটির প্রতি আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।

শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিতে (থার্ড কমিটি) প্রস্তাবটি পাস হয়।

যেখানে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়ে ১৪২টি। চীন ও রাশিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ ক্যাম্বোডিয়া ও লাওস প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। এছাড়া ভোট দানে বিরত থাকে ২৬টি দেশ ।

মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির পক্ষে বাংলাদেশ ও ইউরোপের জোট ইইউর পক্ষে অস্ট্রিয়া যৌথভাবে এই প্রস্তাবটি তুলেছিল।

প্রস্তাবের পক্ষে ওআইসির বক্তব্যে জাতিসংঘ তুরস্কের স্থায়ী প্রতিনিধি ফরিদুন সিনিরলিগ্লু বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নানা কৌশলে নির্যাতিত হয়ে আসছে, ২০১৭ সালে তাদের উপর অভিযান ছিল ওই কৌশলেরই একটি ধাপ।

সবাই মিলে সমন্বিত একটি কৌশল প্রণয়ন করতে না পারলে এই সঙ্কটের সমাধান অসম্ভব বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

আলোচনায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের স্বার্থে এই প্রস্তাব পাস করতে সবাইকে আহবান জানান।

আলোচনার পর প্রস্তাবটি ভোটাভুটিতে যায় এবং তা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাস হয়। থার্ড কমিটিতে গৃহীত এই প্রস্তাব আগামী ডিসেম্বরে সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে উপস্থাপিত হবে।

গত বছর এই থার্ড কমিটিতে ওআইসির আহবানে একই ধরনের একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, যা পরে সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে পাস হয়।

মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে কয়েক দশক ধরে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। গত বছরের আগস্টে রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযান শুরুর পর আরও সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের মুখে মিয়ানমারের সৈন্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠে আসে। জাতিসংঘ একে বর্ণনা করেছে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার এই শরণার্থীদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই অনুযায়ী ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু আতঙ্কিত রোহিঙ্গাদের আপত্তির মুখে তাদেরকে যেতে বাধ্য করা হয়নি।

Share this news on: