চেয়ারম্যান প্রতীক দিচ্ছি দেখেই মারামারি তা কিন্তু না: প্রধানমন্ত্রী

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “মুশকিল হচ্ছে এখানে আমরা শুধু চেয়ারম্যান পদে প্রতীক দিচ্ছি, কিন্তু মেম্বার পদে কোনো প্রতীক নেই। তাদের কোনো প্রতীক থাকে না। আপনারা যদি ঘটনাগুলো দেখেন, মেম্বারদের মধ্যেও গোলমাল, তাদের মধ্যেও কাটাকাটি। শুধু যে চেয়ারম্যান প্রতীক দিচ্ছি দেখেই মারামারি তা কিন্তু না।”

গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সফর সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সংঘাত-সহিংসতায় এরইমধ্যে ৪৬ জনের প্রাণহানী ঘটার বিষয়টি তুলে ধরে একজন সাংবাদিক বলেন, অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় সহিংসতা বাড়ছে বলে কেউ কেউ মত দিচ্ছেন। এ অবস্থায় দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না করে আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা উন্মুক্ত করার মত পদক্ষেপ নেবে কি না। 

উত্তর দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনী সহিংসতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে, তবে এটা ঠিক, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা আগেও হয়েছে। এখনও হোক সেটা চাই না। একটা হানাহানি, ভোট দিতে গিয়ে মানুষের প্রাণ যাবে এটা কখনও গ্রহণযোগ্য নয়।”


বিএনপিসহ বিভিন্ন দল দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও তাদের নেতারা যে অনেক জায়গায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছে, সে বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “তৃণমূলে দেখা যায় একজনকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে, অনেকের আকাঙ্ক্ষা থাকে। নির্বাচন তো সবাই করছে, আমরা যেমন আওয়ামী লীগের নামে করছি, বিএনপি নাম ছাড়া করছে, অন্যান্য দলও করছে। এই যে হানাহানি মারামারি, কোথায় কোথায়, কাদের মধ্যে হচ্ছে- সেটা আপনারা দেখেন। আমাদের দলের মধ্যে যেগুলো হবে, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

“শুধু ব্যবস্থা না, আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, তাদের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করেছে, যতই ভালো প্রার্থী হোক… যারাই দলের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে, আমরা কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা কিন্তু ছাড়ব না।

“কিন্তু এদের (আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী) বাইরে যারা নির্বাচনে হানাহানি করল, এখন তো তারা দলীয় ভাবে নির্বাচনে আসছে না, সে দিক দিয়ে তারা চালাকিটা ভালোই করল।… নির্বাচনও করছে মারামারিও করছে। উস্কেও দিচ্ছে, আবার বিজয়ীকে সমর্থন দিয়ে আরেকটা মারামারি বাঁধিয়ে দিচ্ছে। কাজেই সেটাও দেখতে হবে…।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোনো প্রাণহানি হোক, এটা আমরা কখনও চাই না। এটা হওয়া উচিৎ না। এটা যেখানে যেখানে ঘটেছে সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, সেটা কিন্তু আমরা রক্ষা করে যাচ্ছি।”

Share this news on: