পদ্মা সেতুর ১ হাজার ২০০ মিটার দৃশ্যমান

স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতুতে বসানো হয়েছে আরও একটি স্প্যান। এ নিয়ে মোট আটটি স্প্যান বসল সেতুতে। ফলে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর টানা ১ হাজার ২০০ মিটার।

পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যান বসানোর দৃশ্য (ভিডিও)

বুধবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ূন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার সকাল আটটা থেকে জাজিরা প্রান্তে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর খুঁটির ওপর অষ্টম এই স্প্যান বসানো কাজ শুরু হয়। তবে ঘন কুয়াশার কারণে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় স্প্যানটি বসাতে কিছুটা বিলম্ব হয়।

হুমায়ূন কবির জানান, মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে অষ্টম স্প্যানটি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি জাজিরার নাওডোবার উদ্দেশে রওনা হয়। স্প্যানটি বিকেলে জাজিরার নাওডোবার প্রান্তে পৌঁছে। বুধবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানো হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেন ‘তিয়ান ই’ দিয়ে মাওয়া থেকে জাজিরা প্রান্তে আনা হয়। জাজিরা নাওডোবা প্রান্তের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর ধূসর রঙের স্প্যানটি বসানো হয়।

প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, জাজিরার প্রান্তে একটানা সপ্তম স্প্যান বসানো হচ্ছে। এর আগে মাওয়া প্রান্তে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট স্প্যানের সংখ্যা হবে আট। তিনি বলেন, পরিস্থিতির ওপর কোনো মাসে একটি-দুটি অথবা তিনটি পর্যন্ত স্প্যান বসানো যেতে পারে।

এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান, ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান ও সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারের ওপর ষষ্ঠ স্প্যান বসানো হয়। এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর একমাত্র স্প্যানটি বসানো হয়। আর বুধবার জাজিরার নাওডোবায় বসানো হলো আরেকটি স্প্যান। এ নিয়ে পদ্মা সেতুতে মোট স্প্যান বসলো আটটি।

পুরো সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। একটি থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার।

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: