দেশের প্রতিটি অর্জনে শিল্পীদের অবদান রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে ও অর্জনে দেশের শিল্পী সমাজের অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান হাতে লেখা এবং সেটার প্রথম ডিজাইন কিন্তু দেশের শিল্পীরা যারা ছিলেন তারাই করেছিলেন।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় জাদুঘরের নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে আঁকা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : মহাজীবন পট’ চিত্রকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের আঁকা দেড়শ ফুট আকারের (দেশের সর্ববৃহৎ) এ চিত্রকর্ম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবন পট’ এর চিত্রকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই অনন্য সৃষ্টিকর্মের আমাদের শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে যে তথ্যগুলো প্রকাশ হচ্ছে সেটা কিন্তু আমাদের অনেক কিছু জানায়।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, শিল্পী বিকাশ স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছু চিত্রকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা সত্যিই বিস্মিত হয়েছি। কারণ একজন শিল্পী কীভাবে এমন চিত্রকর্ম আঁকতে পারেন, তারমধ্যে যদি বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা না থাকে, আত্মবিশ্বাস না থাকে! তাহলে কোনোদিন এমন চিত্রকর্ম আঁকা সম্ভব নয়। এটি একটি অসাধারণ শিল্পকর্ম।

শেখ হাসিনা বলেন, ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। সেজন্য ২১ বছর এই জাতির জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর এ ২১ বছর একটা চেষ্টাই করা হয়েছিল যেন জাতির পিতার নাম না থাকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নামটাই মুছে ফেলা... সেটা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস হোক আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস হোক। সবকিছু থেকেই তাকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার একটি চেষ্টা পাকিস্তান যেমন করেছে, পঁচাত্তরের পর যারা স্বাধীনতা বিরোধী তারাও করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের যারা শিল্পী-সাহিত্যিক আছেন, তারা তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে, তাদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুর নামটি চিরভাস্বর করে রেখেছেন। সেজন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কারণ একটি প্রতিকূল অবস্থার মাঝেও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি থেকেই শুরু করে সবাই কাজ করেছেন। আমরা রাজনৈতিকভাবেও চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের দেশের প্রতিটি অর্জনে, সংগ্রামে শিল্পীদের অনেক অবদান রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, চিত্রকলার প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ ছিল। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি থেকে উঠে আসা একজন নেতা। তার চিত্রকর্মটিও মাটির রঙ দিয়ে আঁকা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান হাতে লেখা এবং সেটার প্রথম ডিজাইন কিন্তু দেশের শিল্পীরা যারা ছিলেন তারাই করেছিলেন।

তিনি বলেন, এটিকে এমনভাবে প্রদর্শন করা উচিত যেন সকল মানুষ এটিকে দেখতে পায়। শুধু এয়ারপোর্ট না টুঙ্গিপাড়ায় এমন একটা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হবে, এমন একটা জায়গায় করার চেষ্টা করছি... যারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যান তারাও এই চিত্রকর্মটি দেখতে পাবেন। তার জন্য একটা স্থান সৃষ্টি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এই চিত্রকর্মটি অনলাইনেও যেন মানুষ দেখতে পারেন সে ব্যবস্থাটি আমরা করব। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সেখানে আমরা এটিকে স্থাপন করব। এই চিত্রকর্মটি আমরা সমগ্র বাংলাদেশে যেন প্রদর্শিত হয় সে ব্যবস্থা করব। সেই সঙ্গে আমাদের প্রবাসে যারা আছেন, তাদের দেখার ব্যবস্থা করব। এটা করা খুব কঠিন কাজ নয়। এটা আমরা করতে পারব। এসময় দেশের শিল্পীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ঘোষণা দেন সরকার প্রধান।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডোনাল্ড লু’র সফরে ভিসা নীতি ও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী May 13, 2024
img
যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন তাসকিন, বিকল্প হতে পারেন যিনি May 13, 2024
img
যে ভুলের কারণে আপনার ঘরের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে May 13, 2024
img
কুতুবদিয়ায় এমভি আবদুল্লাহ, ২৩ নাবিক চট্টগ্রাম পৌঁছাবেন মঙ্গলবার May 13, 2024
img
খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবারও ১০ শতাংশ ছাড়াল May 13, 2024
img
হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়ায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি সৌদি রাষ্ট্রদূতের May 13, 2024
img
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট May 13, 2024
img
সন্ত্রাস করলে আবারও বিএনপিকেই পালাতে হবে : কাদের May 13, 2024
img
আজ থেকে শুরু এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জ, আবেদন করবেন যেভাবে May 13, 2024
img
লোকসভা নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু May 13, 2024