গাছ ভালোবাসে না এমন মানুষ নেই। তবে শহুরে জীবনে বাগান করা হয় না সেভাবে। গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই অনেকে ইনডোর প্ল্যান্ট বা ছায়াবান্ধব গাছ লাগাচ্ছেন। এই গাছগুলো ঘরের শোভা বাড়ানোর সঙ্গে চোখে আর মনে স্বস্তি নিয়ে আসে। তবে অনেক সময় দেখা যায় ঘরের গাছ শুকিয়ে যায়। এমনকি অনেক সময় শুকিয়ে গাছ মারাও যায়। কয়েকটি ভুলের জন্যও ঘরের গাছ টিকে না। লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েব সাইট ব্রাইটসাইটে উঠে এসেছে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ ও তার সমাধান।
পানি কম দেওয়া: অনেক সময় দেখা যায় হঠাৎ করেই গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছে, কুঁচকে গিয়ে বাদামি বর্ণ ধারণ করছে। সব মিলিয়ে নেতিয়ে যায় গাছ। এমন হওয়ার কারণ প্রয়োজনের তুলনায় গাছে পানি কম দেওয়া। ঠিক মত পানি দিলেই ফিরে আসবে গাছের সবুজ ছায়া। বৃষ্টিহীন বসন্ত ও গ্রীষ্মের মতো শুষ্ক আবহাওয়ায় গাছে একটু বেশি পানি দিতে হতে পারে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা: পানি দিলেই হবে না টবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও থাকতে হবে। গাছ মরে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো গাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি দেওয়া। টবে অতিরিক্ত পানি জমে গাছের শিকড়ে পচন ধরতে পারে। এই পচন থেকে একটা সময় গাছ মরেও যেতে পারে। এ কারণে পানি যেন জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সহজে পানি নিষ্কাশনের জন্য ছিদ্রযুক্ত টবের ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
ভুল টব নির্বাচন: আমরা প্রায় সময় ভুল টপ নির্বাচন করে গাছ রোপণ করি। এটা অনেক সময় গাছ শুকিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যখন দেখবেন গাছটার বৃদ্ধি থেমে আছে। পাতাগুলোও কেমন যেন বিবর্ণ, শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। দ্রুতই মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন হলে বুঝতে হবে বহুদিন ধরে একই টবে থাকায় পুরো টব শিকড়ে ছেয়ে গেছে। গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়ে আছে স্থবির। এমন হলে
এখন যে টবে গাছটা আছে তার থেকে বড় আকারের টবে বা ড্রামে প্রতিস্থাপন করুন।
অনেক সময় দেখা যাত গাছে পানি দিলেও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে না তখন বুখতে হবে আপনি ছোট গাছ বড় টপে রোপণ করেছেন। তাই ছোট চারা শুরুতেই ছোট পাত্রে দিন।
আলোকস্বল্পতা: গাছের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের আলো দরকার। সূর্যের আলর স্বল্পতা সালোকসংশ্লেষণ করতে বাঁধা দেয়।। মনে রাখতে হবে ইনডোর প্ল্যান্ট ছায়াবান্ধব হলেও এদেরও কিন্তু আলো-বাতাসের দরকার হয়। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও গাছগুলো রোদে দিন।
কীটপতঙ্গ: প্রায় সময় গাছে পারে পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়। ছত্রাকের সংক্রমণ আর মিলিবাগের আক্রমণই হয় বেশি। পোকা ও ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন জৈব বালাইনাশক।
ভুল মাটির ব্যবহার: অতিরিক্ত এঁটেল মাটি পানি নিষ্কাশনে বাধা দেয়। আবার অতিরিক্ত বেলে মাটি পানি ধরে রাখতে পারে না। তাই টবে মাটি প্রস্তুতের সময় বেলে-দোআঁশ মাটি বেছে নেওয়া ভালো। এ ছাড়া ক্যাকটাস এবং অন্যান্য খরা-সহনশীল জাত মরুভূমির মতো মাটিতে স্বাচ্ছন্দ্য। ক্যাকটাসের জন্য মাটি প্রস্তুত করতে বালু, হাড়ের গুঁড়া ও দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা হয়। আর তা এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়, যেন টবের অতিরিক্ত পানি সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।