কালের পরিক্রমায় ভেসে যায় কতকিছু, পাল্টে যায় মানুষের ইচ্ছে, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন… তারতম্য ঘটে চাহিদায়…তা পূরণের পথও বদলে যায়। মাগুরার ফয়সাল বনে গেলেন সাকিব আল হাসান! বাংলার ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড। বিশ্বসেরার তকমা লাগিয়েছেন গায়ে। মুখে মুখে নয়, নিজ সামর্থ্যের বলে। ২২ গজের পারফরম্যান্সে। তবে হঠাৎ এ কোন সাকিবের দেখা মিলছে হর হামেশা? বিসিবিরও কেন এমন আচরণ? কে কাকে বুঝতে পারছেন না? নাকি চাইছেন না বুঝতে? ‘তোমাকে বুঝি না প্রিয়, বোঝো না তুমি আমায়’ লিরিক্সটির প্রতীকী রূপ তাহলে এ দুজন হতেই পারে।
পাপন-সাকিবের বেসুরো সুরে তাল নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের। সিরিজ শুরুর আগেভাগে ক্রিকেটারের অনুমতি চাওয়া, আবার অনুমতি সাপেক্ষে তাকে দলে রাখা। তারপর আবার সেই ক্রিকেটারই জানালেন ‘মানসিক ও শারীরিক' কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলা উচিত হবে না, শ্রীলঙ্কা সিরিজ তো ভাবনায়ও নেই’। এমনটা কিন্তু তেমন নতুন কিছু না! চমকে দেয়াই যেন কাজ সাকিবের, আর বোর্ডের কাজ তার এমন সারপ্রাইজ প্যাকেজে চমকে যাওয়া, অনেক বেশি বিচলিত হওয়া। একটি দল যখন কোনো সিরিজ খেলতে যায় তার পূর্ব মূহুর্তে দলের ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের সকলেরই টিম প্ল্যান থাকে, নিজস্ব প্ল্যান থাকে। সেই প্ল্যানে তারা অপশনও রাখে। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে যেখানে তারা পরিবর্তন আনে। কিন্তু যখন আগ মুহুর্তে কোনো পক্ষই জানে না তারা কী করতে যাচ্ছেন বা কাদের নিয়ে যাচ্ছেন তখনই বিপত্তিটা বাধে। আর এই বিপত্তির শিকার শুরুতেই বলেছি, বাংলাদেশ ক্রিকেট।
আবার হাস্যোজ্জ্বল চেহারা আর বিজ্ঞাপন করতে গেলেই যে কেউ মানসিক পীড়ার মধ্যে থাকতে পারবেন না এমনটা কিন্তু চিকিৎসা বিদ্যার কোথাও নেই। মানুষ দুঃখেও অনেক সময় হাসে যেমনটা কাঁদে সুখকর কোনো মূহুর্তে। ছেলে-মেয়ের ভালো কোনো সংবাদের খুশিতে মায়ের চোখে যেমন জল আসে, তেমনি অতি শোকেও কাঁদতে ভুলে যায় অনেকে…হাসি দিয়েই ভারাক্রান্ত মনে আবরণ দেয়। সাকিব হয়তো বা তেমনই কোনো সমস্যায় আছেন। তবে বোর্ড প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে আছে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন!
তবে একটি জায়গায় বোর্ড সভাপতি ও সাকিবের কথার একাত্মতা খুঁজে পাওয়া গেছে, তা হলো ক্রিকেটারদের ইয়ার ক্যালেন্ডার রাখা। কে কোন সিরিজ খেলতে চায় বা কোন ফরম্যাট খেলতে চায়। তখন হয়তো দু’পক্ষই জানবে পুরো বছরজুড়ে কার কোন সময়ে কী দায়িত্ব রয়েছে। সিরিজ নিয়ে দু’পক্ষের সিদ্ধান্তে আসার দিন হিসেব করলে বাকি রয়েছে মাত্র একদিন। এখন দু’পক্ষ কি দীর্ঘস্থায়ী কোনো সিদ্ধান্তে যাবে? নাকি উভয়েই ভিন্ন কোনো চমক নিয়ে আসবে? এতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের লাভ-ক্ষতির পাল্লাটা কোন দিকে ঝুঁকবে?