জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তিতে হুমকির মুখে খাদ্য উৎপাদন

বদলে যাচ্ছে জলবায়ু, বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। সেই সঙ্গে বদলে যাচ্ছে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য। এতে বিশ্বের খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতায় মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে, যার ফলে ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদন গভীর সংকটের মুখে পড়বে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর এক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদনক্ষমতা হ্রাস নিয়ে এই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বংশ, প্রজাতি ও বাস্তুসংস্থান প্রতিটি পর্যায়েই জীববৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এটা জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বের সার্বিক খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থার সামর্থ্য হ্রাস করে দিচ্ছে।

গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্ব থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের জীববৈচিত্রের বংশধরের বিলুপ্তির পরিমাণ বাড়ছে। কৃষকের মাঠে ফসলের বৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনে হুমকি বেড়েই চলেছে।

জীবজগতের আবাসস্থল ধ্বংস, অতিরিক্ত শোষণ, পরিবেশ দূষণসহ অন্যান্য হুমকির কারণে প্রজাতি পর্যায়ে যেসব জীব পরাগায়ণ ও কীট ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখছে, তাদের পরিমাণ কমে যাচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে বায়োলজিক্যাল কনজারভেশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে প্রায় ৪০শতাংশ কীট প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। যা এই গ্রহের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।

এমনকি বড় বড় প্রজাতির প্রাণীগুলোও আজ হুমকির মুখে। যেখানে এই জীবজগতের ২৫ শতাংশেরও বেশি প্রজাতি বিলুপ্তির পথে এবং মাত্র ৭শতাংশ প্রজাতি ঝুঁকির বাইরে আছে বলে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে জীববৈচিত্রের উপর এই বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, জমির অতিরিক্ত ব্যবহার, ক্ষতিকর প্রজাতির বিস্তার ইত্যাদি কারণেও বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন হুমকির মুখে।

সেইসঙ্গে জীববৈচিত্রের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বে যে গবেষণা কার্যক্রম রয়েছে তা অত্যন্ত সীমিত। ভবিষ্যতে এই গবেষণাখাতে বিনিয়োগ না বাড়ালে এই সমস্যা আরও ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যাবে বলে ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়।

তাই জীববৈচিত্রের টেকসই ব্যবহার ও সংরক্ষণের ব্যাপারে উপযোগী নীতি প্রণয়ন এবং গবেষণা বৃদ্ধি করতে এই প্রতিবেদনে আহ্বান জানানো হয়।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ