সারাদেশে টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে কুড়িগ্রাম ও শেরপুরে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ক্রমেই অবনতি হচ্ছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। সিলেটের শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারা ও সারিঘাট পয়েন্টে সারি নদী বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে কিছুটা কমেছে সুরমা নদীর পানি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে দক্ষিণ সুরমা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার গ্রাহক। সিলেট নগরে আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকেই।
অন্যদিকে, কুড়িগ্রামে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে ৬ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানির তীব্র স্রোতে নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদীর তীররক্ষা বাঁধের ১শ মিটার ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। বসত বাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
এদিকে, শেরপুরে মহারশী নদীর পানি বেড়ে দুই উপজেলার ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী অন্তত ২০ হাজার মানুষ। পানির স্রোতে শুক্রবার বিকেলে চেল্লাখালী নদীর দুইটি লোহার ব্রিজ ভেসে গেছে। ভোগাই নদীর সাতটি জায়গায় পাড় ভেঙ্গে প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা।
অন্যদিকে, লালমনিরহাটে দোয়ানি ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। নীলফামারী, রংপুরের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
বন্যায় ভেসে গেছে পাট, বাদাম, ভুট্টা, ধানের বীজতলা, মাছের ঘের। এখনও তলিয়ে আছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। দুর্গত এলাকায় যোগাযোগ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট। শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে দুর্গতরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা অধিকাংশ এলাকায় তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের দোয়ানি ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি কমে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কুড়িগ্রামের শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখনই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।