বিকেল ৩ টায় সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসা পর্যটকেরা কক্সবাজার পৌঁছালো ভোর ৫ টায়

১৪ ঘন্টারও বেশী সময় পর সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারে ফিরেছে পর্যটকবাহী জাহাজ বে ওয়ানের যাত্রীরা। সেন্টমার্টিন থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে জাহাজটি। রাত ৯ টার দিকে গভীর সমুদ্রে আটকে যায় জাহাজটি।

জাহাজটিতে ১৩০০ পর্যটক ছিলো বলে জানা গেছে। বুধবার ভোর ৫ টার কিছু পর কক্সবাাজার শহরের বি আই ডব্লিউ টি এ ঘাটে আসে বে ওয়ান থেকে পর্যটকদের স্থানান্তরিত হওয়া বার আউলিয়া জাহাজ টি। 

ফেরত আসা যাত্রীরা এসময় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে নারী পর্যটকেরা জানান,ছোটো বাচ্চা বর বয়স্ক মানুষের ভোগান্তী ছিলো চরমে। অনেকে বসার জায়গা না পাওয়ায় ১৪ ঘন্টা দাড়িয়ে ফেরত এসেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। কোলকাতা থেকে আসা চিকিৎসক দম্পতি জানান, জাহাজ কর্তপক্ষের অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতা ছিলো।

জাহাজের ১৫ শতাংশ যাত্রীকে খাবার দেয়া হয়েছে। কোলকাতার এ চিকিৎসক দম্পতি বলেন,আগের দিন ভোর ৫ টায় তারা ঘাটে আসে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্যে আর পরদিন ভোর ৫ টায় ফিরেছে, সেন্টমার্টিন দেখার সুযোগও হলো না, মাত্র ৪৫ মিনিট দ্বীপে অবস্থান করার সুযোগ হয়েছিলো। 

ঢাকা থেকে আসা আরেক দম্পতি জানান,সমুদ্র উত্তাল ছিলো, এসময় বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করে নি। সেই সাথে তিনটি আলু সিংগারার দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা, খিচুড়ির দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। আরেক পর্যটক জানান,তিনি সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কিনেছেন কেবিনের, তাকে খাবারও দেয়া হয়নি। তার স্ত্রী জানান,বাচ্চাদের নিয়ে রাতভর সমুদ্রে ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা হলো। 

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কর্ণফুলী ক্রজ লাইনের কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম টিটিএন কে জানান, জোয়ার ভাটা জনিত কারনে কক্সবাজার থেকে বারো আউলিয়া জাহাজে করে গভীর সমুদ্র থেকে কক্সবাজার ঘাটে যাত্রীদের ফেরত আনতে সময় লেগেছে। এতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিলোনা বলে দাবী করে তিনি বলেন, যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি বলেই লাইফ জ্যাকেট দেয়া হয় নি।

জাহাজে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট ছিলো বলে তিনি জানান। খাবার সকল যাত্রী না পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন,সবাইকে খাবার দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। খাবারের অতিরিক্ত দাম নেয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাহাজের খাবারের দোকান কর্তৃপক্ষ অন্যজনকে ভাড়া দিয়েছে, এখানে জাহাজ কর্তৃপক্ষের কোনো হাত নেই। তিনি জানান, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা,দূর্ঘটনা নয়, সকল যাত্রী নিরাপদে ফিরেছে। এবং এরকম আর সমস্যা হবে না বলেও জানান।

টেকনাফ থেকো সেন্টমাটিন নৌরুটের কিছু অংশে নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজ চলাচল এ বছর বন্ধ রয়েছে। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুটো জাহাজ সেন্টমাটিন যাতায়াত করে পর্যটকদের নিয়ে। তবে প্রায়শ জাহাজ পৌঁছাতে দেরী সহ নানান অভিযোগ শোনা যায় পর্যটকদের কাছ থেকে।

এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ কর্নফুলী জাহাজ এবং সকাল ৮ টা নাগাদ বে ওয়ান সময় ক্রুজ সেন্টমাটিনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার থেকে রওয়ানা করেছে বলে জানা গেছে। 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা : এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই হবে সব ক্ষমতার মালিক Nov 21, 2024
img
ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট চালুর অনুরোধ পেয়েছে বাংলাদেশ: তৌফিক হাসান Nov 21, 2024
img
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুক হামলা, নিহত ৩৩ Nov 21, 2024
img
অর্থ আত্মসাৎ:বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে দুদকের তলব Nov 21, 2024
img
ডেঙ্গুতে একদিনে ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১২১৪ Nov 21, 2024
img
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা Nov 21, 2024
img
রো‌হিঙ্গা সংকট:অংশীজনদের নিয়ে আগামী বছর জাতিসংঘের কনফারেন্স Nov 21, 2024
img
নির্বাচন কমিশনার হলেন ৪ জন, নিয়োগ পেলেন যারা Nov 21, 2024
img
আয়রন ও হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায় Nov 21, 2024
img
সিইসি হলেন সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন Nov 21, 2024