বন্ধুর চিকিৎসার নাম ভাঙিয়ে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

রংপুরে সড়ক দূর্ঘটনার স্বীকার বন্ধুর চিকিৎসার খরচ যোগাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেদন করে পনের লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তুলেছে লিমন নামে এক শিক্ষার্থী। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গত ২০ জুন সড়ক দূর্ঘটনার স্বীকার হয়ে তার বাবা মারা যান। কিন্তু তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় বে-সরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হলে তার (রংপুরের) বন্ধু নিম্মেল, তার চিকিৎসার সকল রিপোর্টের ছবি তার বোনের কাছ থেকে নেয়। ছবি নেবার পর নিম্নমেলের নেতৃত্বে আরো কয়েকজন ব্ন্ধুমিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন চেয়ে একটি পোষ্ট করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এবং রংপুরের বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে তারা টাকা তুলতে থাকে।

পরে ঘটনা জানতে পেরে ভুক্তভোগী লিমনের পরিবার তাদের সাথে যোগাযোগ করে কিন্তু তারা কোন টাকা পয়সা না দিয়ে উল্টো তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকে বলে জানায় ভুক্তভোগীর বোন। 

এ ঘটনায় সম্পৃক্ত লিমনের কয়েকজন বন্ধুর সাথে সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, টাকা পয়সার হিসেব সব নিন্মেলের কাছে আছে আর আমরা হাতে যা টাকা পেয়েছি সব নিম্মেলের হাতে দিয়েছি। সে আমাদের বলেছে যে লিমনের কাছে প্রতিদিন সে টাকা পাঠায়। এর বেশী কিছু আমরা জানি না।

প্রতারণার প্রধান অভিযুক্ত নিম্মেল জানান, আমি কোন টাকা তুলিনি। আপনাদের কাছে প্রমান থাকলে তা দেন। ওরা আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।

এ বিষয়ে সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আলম মুকুল জানান, এ বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলা মত সৎ সাহস আমার নেই। আর টাকা তোলার বিষয়টি অবগত তবে কত টাকা উঠেছে এ বিষয়ে তিনি জানেন না। অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, ছাত্ররা যদি ১০০ টাকা তোলে তাহলে ত্রিশটাকা তারা হয়তো নিয়েছে। আর ভুক্তভোগীর বোন মামলা করলে করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, পনের লাখ টাকার বিষয়টি মিথ্যা,তারা পনের লাখ তোলেনি যা তুলেছে তা হয়তো পাঠিয়েছে ভুক্তভোগীর কাছে। টাকার হিসেব আমার কাছে নেই। কত টাকা উঠেছে এবিষয়ে আমি অবগত নই। আর সার্টিফিকেট আটকানোর বিষয়টি ভিত্তিহীন। 

এদিকে ভুক্তভোগীর বোন মাহিয়া মেজবান রিফা জানায়, আমরা সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে উল্টো উনি আমাদেরকে বলেন যে আমার ভাইকে কলেজ থেকে বের করে দিবেন। এবং সে দূর্ঘটনার সময় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার স্কুলের যে বকেয়া বেতন হয়েছে সেটা পরিশোধ না করলে আমার ভাইয়ের সার্টিফিকেট আটকিয়ে দেবেন পাশাপাশি মামলার হুমকি দিয়েছেন। এমত অবস্থায় আমি চাই আমার ভাইয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা এমন একটি জঘন্য কাজ করেছে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক যাতে ভবিষ্যতে আমাদের মত ভুক্তভোগী আর কাউকে হতে না হয়।

ভুক্তভোগীর বোন মাহিয়া মেজবান রিফা আরো জানান, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি।

এদিকে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) নাজমুল কাদের মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আমরা পাইনি, পেলে অবশ্যই তা বিবেচনা করে গ্রহন করবো।

Share this news on: