শীতে কম পানি খাওয়াতেই বিপদ, জটিল আকার নিতে পারে ডিহাইড্রেশন!

বার্ধক্যকে দূরে রাখা নিয়ে প্রতিদিন হচ্ছে নানা ধরণের গবেষণা। Lancet-এর এক নতুন গবেষণা অনুসারে ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীরে বয়সের ছাপ পানিদি পড়ে। এমনকী, পানিদি মৃত্যুও কড়া নাড়তে পারে। সঙ্গে যারা রোজ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করেন তাঁরা অনেক বেশি দিন বাঁচেন ও তরতাজা থাকেন। এমনকী হার্ট বা ফুলফুসের সমস্যাও তাঁদের অনেক কম হয়।

গবেষকরা এই অনুমানটি পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন যে হাইড্রেটেড থাকা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ১১ হাজার ২০০ মানুষের উপর তারা তিন দশক ধরে ডেটা ট্র্যাক করে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ৫০ থেকে ৯০।

নিয়মিত পানি খাওয়া শরীর ডিটক্স করার আরেকটি প্রধান উপায়। প্রতিদিন সাত থেকে আট গ্লাস পানি খেলে পেটের হাল ভালো থাকে। পাশাপাশি রোজকার ডায়েটে পানীয় ফল রাখা যেতে পারে। এতে দেহে পানির যোগান ঠিক থাকে।

গবেষকরা একজন ব্যক্তির হাইড্রেশনের মাত্রা নির্ধারণ করতে এবং তারা ডিহাইড্রেটেড কিনা তা খুঁজে বের করতে সিরাম সোডিয়াম পরীক্ষা করেন। যেখানে কারও রক্তে কতটা সোডিয়াম আছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। মায়ো ক্লিনিকের মতে, একজন ব্যক্তির রক্তে সাধারণত সোডিয়ামের মাত্রা প্রতি লিটারে ১৩৫-১৪৫ মিলিমোলের মধ্যে থাকা উচিত।

গবেষকরা দেখেছেন যে প্রতি লিটারে ১৪৪ মিলিমোলের বেশি সোডিয়াম মাত্রা অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। প্রতি লিটারে ১৪২ মিলিমোল বা তার সামান্য বেশি সোডিয়ামের মাত্রা দীর্ঘস্থায়ী রোগের ৩৯ শতাংশ বেশি ক্রনিক ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর অর্থ হল, যে সমস্ত লোকেদের শরীরে সেরাম সোডিয়ামের মাত্রা 142 mmol/l বা তার বেশি তাদের অকালে মারা যাওয়ার বা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সুতরাং, গবেষণা অনুসারে, দীর্ঘস্থায়ীভাবে ডিহাইড্রেশন জীবনকালকে ছোট করতে পারে। যদিও বেশি করে পানি পান করাই দীর্ঘ জীবনের একমাত্র চাবিকাঠি নয়। তবে এটি অবশ্যই একটি সুস্থ শরীরের জন্য অন্যতম সঠিক পদক্ষেপ।

কার কতটা পানি পান করা উচিত তার কোনও সুপারিশ নেই। সাধারণভাবে, বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ন্যাশনাল একাডেমি ফর সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন ইউএস পুরুষদের ৩.৭ লিটার ও মহিলাদের ২.৭ লিটার পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

নিজেকে আদ্র রাখার জন্য একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পানি পান করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করা ভীষণ উপকারি। লাঞ্চ আর ডিনারের আধা ঘণ্টা আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে অধিক খাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে। যদি কখনও মনে করেন আপনার শরীর পানিশূন্যতায় ভুগছে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Share this news on: