ভিক্ষা করে পেট চালানো শতবর্ষী লোকসংগীতশিল্পী পেলেন পদ্মশ্রী

ভারতের উত্তরবঙ্গের লোকসংগীতশিল্পী মঙ্গলকান্ত রায়। স্থানীয়রা তাকে ডাকেন মংলা গোঁসাই নামে। বয়স একশো পেরিয়েছে। জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসে অবশেষে তিনি পেলেন পদ্মশ্রী সম্মান।

সেই কিশোরবেলা থেকে সারিঞ্জা বাজিয়ে আসছেন মংলা গোঁসাই। প্রায় পাঁচশো বছরের বেশি পুরনো এই বাদ্যযন্ত্র এখন আর খুব বেশি শোনা যায় না। মঙ্গলাকান্তি রায়ই সেই হাতে শোনা শিল্পীদের একজন। যদিও এরপরেও সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেননি কখনো।

তবে পুরস্কৃত হয়েছেন আগেও। ২০১৭ সালে তাকে বঙ্গরত্ন দেওয়া হয়। সেই পুরস্কার পেয়ে অবশ্য আর্থিক লাভ হয়নি তেমন। আয় বলতে ছিল মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার ডাক। কিন্তু লকডাউনে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করেই পেট চলে এই সংগীতশিল্পীর।
করোনাভাইরাস যখন প্রথম এলো, সে সময়ে এক সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা যায় তার করুণ পরিস্থিতির কথা। তিনি যে কতটা অসহায় দিন কাটাচ্ছেন, সে কথা প্রকাশ্যে আসে। মঙ্গলাকান্তি রায় জানান, বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ার পরে সেটুকু মেরামতির মতো অবস্থাও নাকি তার ছিল না। প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখতেন। এভাবেই কোনো রকম দিন কাটাতে হয় তাকে।

সরকারের থেকে স্বীকৃতি পেলেও আর্থিক সাহায্য বিশেষ পাননি বলে জানান মঙ্গলাকান্তি। সরকারি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গেলে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হত। কিন্তু লকডাউনের সময় থেকে সে সব বন্ধ হয়ে যায়। বয়সের কারণে ভেঙে গেছে গলা। ফলে এখন আয়ের রাস্তাগুলো একে একে বন্ধ হয়ে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষের থেকেও নাকি বিশেষ কোনো সাহায্য পাননি মঙ্গলাকান্তি। ঠিক এমন সময়েই তার হাতে এলো পদ্মশ্রী সম্মান। উত্তরবঙ্গ কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে তাকে পদ্মশ্রী দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের রাতে।
এই খবর পাওয়ার পর শিল্পী মঙ্গলাকান্তি ওরফে মংলা গোঁসাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খবরটা পেয়ে ভালো লাগছে। এই সম্মান পেয়ে তিনি গর্বিত।

Share this news on: