রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনায় আরও তহবিল চায় গাম্বিয়া

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা পরিচালনায় তহবিল সংকটের সম্মুখীন হওয়ায় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাংগারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, মামলাটি চালানোয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও অনেক দেশ অবদান রাখবে।

রোববার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দরকার। রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায়, সেজন্য আমাদের আরও আওয়াজ তুলতে সহায়তা করুন।

তাংগারা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি তাদের হৃদয়ে রয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায় এবং তারা যাতে মর্যাদার সঙ্গে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য তারা তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।

বৈঠকে মোমেন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যা সংক্রান্ত জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের বিষয়গুলোকে সমর্থন করার জন্য গাম্বিয়ার মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গাদের মামলায় আইনি দলের সঙ্গে গাম্বিয়ার অব্যাহত সম্পৃক্ততারও প্রশংসা করেন।

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাংগারা মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনসহ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের আহ্বান জানাতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

বৈঠকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবিলায় বিচার ও জবাবদিহিতার চলমান প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানানো হয়।

দুই মন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে এবং বৈশ্বিক পরিমন্ডলে শান্তি ও ন্যায়বিচার বজায় রাখতে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

উভয় মন্ত্রী শিক্ষা, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ও আইসিটি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ সম্ভাব্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তুলতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

বৈঠকে সংলাপের বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরে এবং বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

দুই মন্ত্রী বহুপাক্ষিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা, দুই দেশের মধ্যে কৃষিতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং ইউক্রেন সংকটের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকের পর, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের একত্রে মোতায়েনের অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ঐক্যমত্যের একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।

গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশ সফররত গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে (এফএসএ) গাম্বিয়ার বৈদেশিক নীতির ওপর বক্তৃতা দেন।

গাম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ ছয় সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাংগারা। গত সপ্তাহান্তে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে।

Share this news on: