বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্ৰ-শস্ত্র ও লুষ্ঠিত মোবাইল উদ্ধারসহ আন্ত: জেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম। গত ০৩/০৩/২০২৩ ইং তারিখ সাভার থানাধীন বিভিন্ন এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের নাম- ১। ফখরুল কবির শান্ত (২৯), ২। মোঃ মনির হোসেন (৩০), ৩। মোঃ ইমরান (২২), ৪। মোঃ মুজাহিদ (৯ বাবু (২৮), ৫। মোঃ রাজিব @ আসিফ (২১) এএবং ৬। মোঃ সানি (২৬)। গ্রেফতারের সময় কালের হেফাজত হতে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্ৰ-শসহ ১৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গত ১২/০২/২০২৩ ইং তারিখে রিসাত পরিবহনের একটি বাস যাত্রীসহ খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে সুপারভাইজার-হেলপারসহ বিকালে গাজীপুরের শিববাড়ী পৌঁছায়। যেখান থেকে পরবর্তী টিপের জন্য গাজীপুর হতে নবীনগর যায়। নবীনগর বাস কাউন্টারে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসটি দারুসসালাম থানাধীন পর্বত সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তার উপরে রেখে বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার ভিতর থেকে দরজা লক করে বাসের পিছনের ছিটে ঘুমিয়ে পড়ে। গত ১৩/০২/২০২৩ ইং তারিখ রাত ১০:৩০ ঘটিকায় ৮/১০ জনের একটি ডাকাত দল গাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে 'উল্লেখিত স্থানে কেন গাড়ি পার্কিং করেছে” তার কারণ জানতে চায়। ডাকাতদের কথার ভাবগতিতে বাসের ড্রাইভার- হেলপার-সুপারভাইজার বশ্যতা স্বীকার করলে ডাকাতদল খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তখন ডাকাত দলের নেতা গ্রেফতারকৃত শান্তর নেতৃত্বে তার সহযোগী গ্রেফতারকৃত সুমন-মনির বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার এর কাছে মানিব্যাগ-মোবাইল ফোন চায়। বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার এর কাছে মানিব্যাগ-মোবাইল ফোন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের রড-হুইলরেছ-পাইপ দিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজারের চোখ ও হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে পিছনের সিটে ফেলে রাখে। ডাকাতদের দলনেতা গ্রেফতারকৃত শান্ত গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর এসে ডাকাত দলের অন্য সদস্য ইমরানকে গাড়ি চালাতে বলে। পরবর্তীতে ডাকাত দলের কয়েকজন নিজেরাই যাত্রী-হেলপার সুপারভাইজার সেজে গাবতলী-আসাদগেট নিউমার্কেট-আজিমপুর-যাত্রাবাড়ী- কাচপুর হয়ে একই পথে এসে আমিনবাজার-সাভার-চন্দ্রা'র বিভিন্ন স্থান হতে একজন একজন করে লোক তুলে মারধর করে। তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাদের চোখ ও পিছমোড়া করে হাত বেঁধে বাসের পিছনে ফেলে রাখে। ডাকাতদল সারারাত ধরে ডাকাতি করে ভোর ০৬:৩০-৩৭:০০ টার দিকে আহত যাত্রাসহ বাসটি সাভার থানাধীন কবিরপুরে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার বাদীসহ অন্য ভিকটিমের বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলটিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ০৩/০৩/২০২৩ ইং তারিখে অভিযান চালিয়ে ঢাকার মিরপুর-গাবতলী, সাভারের গেড়া-রাজপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃ জেলা ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরস্পরের যোগসাজসে নারী সেজে বাসে উঠে বাসের ড্রাইভার হেলপারকে জিম্মি করে বাসের মধ্যে ডাকাতি সম্পন্ন করে। নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে বিভিন্ন স্থান হতে একজন একজন করে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় ০১ টি ডাকাতি মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, আ-মাদক মামলা রয়েছে।