প্রধানমন্ত্রীর সফর কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সেজেছে ময়মনসিংহ

পাঁচ বছর পর কাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহে আসছেন। বিকেলে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ময়মনসিংহে আগমনকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই সাজ সাজ রব। ব্যানার-ফেস্টুন,
বিলবোর্ড আর সুদৃশ্য তোরণে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রতিটি সড়ক, সড়কদ্বীপসহ অলিগলি।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ময়মনসিংহবাসির প্রত্যাশা পুরণে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহকে বিভাগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন। আর এ কৃতজ্ঞতা থেকেই দলীয় সভানেত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা সর্বোচ্চটুকু করছি। আশা করছি জনসভায় ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটতে যাচ্ছে।

তনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। যা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিকনির্দেশনা দেবেন তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব। যা আমাদের দলকে সুসংগঠিত করা এবং আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম জানান, নেত্রীর আগমনের খবরে উচ্ছাসিত গোটা ময়মনসিংহবাসী। এবারও নৌকার আদলে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। মঞ্চের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে। ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রীর এই সমাবেশ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় রূপ দিতে আমরা সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি।

জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সকল ধরণের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে কি কি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ইতোমধ্যে একটি তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিছিদ্র নিরাপত্তায় প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও এখানে পুলিশ আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ মঞ্চের প্রথম সারিতে নিরাপত্তায় থাকবে এপিবিএন। সাধারণ মানুষের যেন কোনো ভোগান্তি না হয় সেজন্য ট্রাফিকের দিক থেকেওে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা কোনো ছাড় দেব না। গ্যাস সিলিন্ডারের যেসব দোকান রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তার পাশাপাশি জনসমাবেশস্থলে আগত জনগণ যেন উৎসবমুখর পরিবেশ পায় সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে ময়মনসিংহ থেকে ৮টি রুটে বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে গত মঙ্গলবার বার্তাটি জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, আগামী ১১ মার্চ ময়মনসিংহ জেলায় যাতায়াতের জন্য গফরগাঁও-ময়মনসিংহ, নান্দাইল-ময়মনসিংহ, দেওয়ানগঞ্জ বাজার-জামালপুর-ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান-ময়মনসিংহ, গৌরীপুর-ময়মনসিংহ, ঈশ্বরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, জারিয়া-ঝাঞ্ঝাইল-ময়মনসিংহ রুটে ৮টি স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ ট্রেনগুলো সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে সব স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষবারের মতো জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এই নগরীতে আবারও আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনকে ঘিরে মানুষের দৃষ্টি এখন সার্কিট হাউস ময়দান।

Share this news on: