মাসুদ রানা দেখে হতাশ দর্শক- বলছেন এ বিগটাইম ডিজেপয়েন্টমেন্ট

গত ২ বছরের এমন বাজে মুভি দেখেন নি- মহাখালি এসকেএএস স্টার সিনপ্লেক্স থেকে বেরিয়েই বলে ফেললেন একজন দর্শক। আরেকজন বউকে অনেক বলে রাজি করিয়ে মাসুদ রানা দেখতে নিয়ে এসেছিলেন ফিরে যাচ্ছেন মুখ কালো করে। বউ এখন তীর্যক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে।
হলের ভেতরে দেখা গেছে, মুভি চলছে এর মধ্যে কেউ ফেসবুক চালাচ্ছেন কেউ মোবাইলে গেম খেলছেন। এভাবেই কোনমতে মুভিটাইম পাস করে বেরিয়ে গেছেন অনেকে।

মাসুদ রানা চরিত্রে মাত্র এক এক্সপ্রেশনই দেখা গেছে পুরো মুভিতে এবিএম সুমনের। এই এক্সপ্রেশনে না আছে হাসি না কান্না। অ্যাকশনটা কতটা নিম্নমানের সেটা স্ক্রিনে ফুটে উটেছে। অ্যাকশনের দৃশ্যে রক্ত যে আলাদা এডিট করে বসানো – সেটা দুর্বল বাজে ভিএফএক্সে ধরা পড়েছে।

আর নবাগত আলিশা ও জেসিয়া এই দু’জনের অভিনয় এত মেকি হয়েছে যে এদের সম্ভাবনাই যেন নসাৎ হয়ে গেছে এই সিনেমায়। চেহারা বা বডি ল্যাঙ্গেয়েজ কোনটাই আকর্যণ নিতে পারেনি।
এই দুজনের কথা বলার ভঙ্গি এক্সপ্রেশন খুবই দুর্বল। শুধু স্ক্রিপ্ট দুর্বলতাই নয় ছবিটা খুবই সস্তা বাজেটের বলে ধরে নেয়া যায়। এসব দেখেই হল থেকে বেরিয়ে হতাশ দর্শক। অনন্ত মাসুদ রানা নামের জন্য যারা এসেছিলেন তারা তো হলের ছবি অর্ধেক রেখে বেরিয়ে গেছেন।

দেশের বাইরেও যেখানে মাসুদ রানার মুভির একই অবস্থা। নিউইয়র্ক জ্যমাইকা থেকে মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন, এমআর-৯ ডু অর ডাই ইজ এ বিগটাইম ডিজেপয়েন্টমেন্ট। বেশি আশা করেছিলাম তাই হতাশার পরিমানটাও বেশী। আমার দুই ছেলে বাংলা মুভি দেখতে খুব একটা ইন্টারেস্টেড না তাদের আমি মাসুদ রানা বিষয়ক মোটিভেশন দিয়ে দেখাতে এনেছিলাম। এরসাথে গতকাল সপরিবারে ইউরোপ ট্যুর থেকে ফেরত আশা আমার কোর্সমেট জামানকেও ভাবী সহ মুভিটা দেখাতে নিয়ে এসেছিলাম। তারা এখন আমার দিকে তীর্যক দৃস্টি দিচ্ছে!
এই দর্শক মনে করছেন, মুভিটার সবচেয়ে দূর্বল দিক তার গল্প স্ক্রিপ্ট। একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা! মুভিটা শেষ হবার পর এক দর্শক চিৎকার দিয়ে বলল “এর থেকে অনন্ত জলিলের মুভি বেটার!”
আমার সাজেসন হল যারা মাসুদ রানা ভাল বাসেন তারা ছবিটা দেখার ইচ্ছাটা মেরে ফেলুন।

বলা হচ্ছে, ঢাকার জাজ মাল্টিমিডিয়া ও হলিউডের সিলভার নাইনের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাটির বাজেট ৮৩ কোটি টাকা, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট। সিনেমার দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস ও লস অ্যাঞ্জেলেস এবং বাংলাদেশে।

হলিউডের অভিনয়শিল্পী ফ্র্যাঙ্ক গ্রিলো, নিকো ফস্টার ও বলিউড অভিনেত্রী সাক্ষী প্রধানদের সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছেন সুমন। এ ছাড়া বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে আনিসুর রহমান মিলন, জেসিয়া ইসলাম, আলিশা ইসলাম, সাজ্জাদ হোসাইনসহ আরও অনেকেই রয়েছেন।

এর আগে ‘মাসুদ রানা’ অবলম্বনে চার যুগ আগে বাংলাদেশে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল, তাতে মাসুদ রানার ভূমিকায় ছিলেন সোহেল রানা। তাতে নায়িকা ছিলেন কবরী ও অলিভিয়া। ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ‘বিস্মরণ’ অবলম্বনে নির্মিত ওই চলচ্চিত্র বেশ ব্যবসা করেছিল।

Share this news on: