খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

নয় দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট ও প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনায় দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে শুরু হওয়া টানা ৭২ ঘণ্টার শ্রমিক ধর্মঘট বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। এরই অংশ হিসেবে বুধবার সকাল ৮টা থেকে খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন পাটকল শ্রমিকরা। এতে খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে বলে জানা গেছে।

মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নসহ নয় দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকলীগ সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদের ডাকে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। শ্রমিকরা নতুন রাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, নতুন রাস্তা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়ক, বিআইডিসি সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন। এছাড়া তারা বিক্ষোভ মিছিল, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করছেন। তাদের অবরোধের কারণে বুধবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো খুলনা রেলস্টেশন থেকে কোনো ট্রেনও ছেড়ে যায়নি। ফলে যাত্রীরা পড়েছে ভোগান্তিতে।

বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন।

আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পি এফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন, বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করাসহ ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা রাজপথে আবার নামতে বাধ্য হয়েছি।

শ্রমিকরা বলছেন, বিজেএমসির আওতাধীন জুট মিলগুলোতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া আছে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ঘোষিত মজুরি কমিশন এখনও চালু করা হয়নি।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা জোনে মোট ২৬টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জোনে রয়েছে নয়টি বড় পাটকল।

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন জানান, বিজেএমসি চেয়ারম্যান ২৮ মার্চের মধ্যে মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না করায় দাবি আদায়ে বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: