রাশিয়ার দাগেস্তানে উপাসনালয়ে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৫ পুলিশ নিহত

রাশিয়ার উত্তর ককেশাস প্রজাতন্ত্র দাগেস্তানে একটি গির্জা এবং ইহুদিদের একটি উপাসনালয় লক্ষ্য করে গতকাল রোববার (২৩ জুন) হামলায় চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এই ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ সদস্য, একজন যাজক এবং একজন নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হয়েছে। এছাড়া হামলাকারীদের মধ্যে ছয়জন নিহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই হামলার পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত রয়েছে। দাগেস্তানে এর আগেও জঙ্গিরা কয়েকদফা হামলা চালিয়েছিল। খবর বিবিসির।

বন্দুকধারীরা ডারবেন্ট এবং মাখাচকালা শহর দুটিকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করে। ডারবেন্ট প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায়ের বাসস্থান হিসেবে প্রসিদ্ধ। দুটি গির্জা এবং দুটি ইহুদি উপাসনালয়কে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়, পরে সন্ত্রাসীরা দুটি স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়। বন্দুকধারীদের গুলিতে দাগেস্তানের বৃহত্তম শহর মাখাচকালায় অর্থোডক্স গির্জার যাজক নিহত হন। দাগেস্তানের রিপাবলিকান দলের নেতা সের্গেই মেলিকভ ১৫ জন পুলিশ অফিসার নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরা কিছু লোক পুলিশের গাড়িতে অনবরত গুলি চালাচ্ছে। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১৫ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে।

হামলায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মাখাচকালা শহরের অদূরে সের্গোকালিনস্কি জেলার প্রধান কর্মকর্তা মাগোমেদ ওমারভকে আটক করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে তার দুই ছেলে এই হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল।

রাশিয়ার অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল দাগেস্তান একটি মুসলিম প্রজাতন্ত্র হিসেবে পরিচিত। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ককেশাস আমিরাত এবং ককেশাস ইসলামি আমিরাত নামে দুটি জিহাদি সংগঠন দাগেস্তান, চেচনিয়া, ইঙ্গুশেতিয়া এবং কাবার্ডিনো-বালকারিয়া প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল।

এ বছরের ২৪ মার্চ মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে আক্রমণ চালায় দুর্বৃত্তরা যাতে ১৩৭ জন মানুষ মারা যায়। রাশিয়া এই ঘটনায় ইউক্রেন এবং পশ্চিমাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল, যদিও ইসলামিক স্টেট হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

এই ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়া ইসলামি মৌলবাদীদের সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্য হতে পারে না কারণ রাশিয়া আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি এবং আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃজাতিগত ঐক্যের একটি অনন্য উদাহরণ রক্ষা করে আসছে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত: শিক্ষামন্ত্রী Jun 30, 2024
img
অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত Jun 30, 2024
img
সোনার দাম ভরিতে কমলো ১ হাজার ৭৩ টাকা Jun 30, 2024
img
মতিউর দম্পতির সম্পদের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের চিঠি Jun 30, 2024
img
ছয় মাসে ৯৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী Jun 30, 2024
img
এইচএসসি পরীক্ষার দিনে বৃষ্টি হলে সময় বাড়ানোর নির্দেশ Jun 30, 2024
img
বেনজীরের কাছে ৪ ফ্ল্যাটের চাবি, তালা খুলতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ Jun 30, 2024
img
সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস Jun 30, 2024
img
গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ৮৩৪ Jun 30, 2024
img
বাড়ছে তিস্তার পানি, ব্যারেজের সব জলকপাট খুলে দিলো কর্তৃপক্ষ Jun 30, 2024