নুসরাতের সুরতহাল প্রতিবেদনে কী আছে?

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এর আগে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুরতহাল প্রতিবেদনটি লিখেছেন ডিএমপির শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মোহাম্মদ শামছুর রহমান।

প্রতিবেদনে শামছুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে স্ট্রেচারে শোয়ানো অবস্থায় নুসরাত জাহান রাফির লাশ দেখতে পাই। পরে লাশটি সনাক্ত করেন মোহাম্মদ আলী।

মোহাম্মদ আলী নুসরাতের চাচাতো ভাই বলে সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শামছুর রহমান বলেন, প্রতিবেদন লেখার আগে সাক্ষীদের উপস্থিতে এবং আয়া চাঁন বিবির সহায়তায় লাশটি ওলট-পালট করে দেখা হয়।

এছাড়াও ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক নুসরাতকে মৃত ঘোষণা করেন উল্লেখ করে সুরতহাল প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, মৃত্যুর সনদ ও মৃত্যুর কারণ হাসপাতালে দেয়া থাকলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো এবং নুসরাত প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের মতামত জানতে চাওয়া হয়।

নুসরাতের সুরতহালের প্রতিবেদনে যা বলা হচ্ছে

সুরতহাল প্রতিবেদন নুসরাতের শরীরের বিবরণ দিয়ে বলা হয়েছে, নুসরাতের বয়স ১৮ বছর। কপাল স্বাভাবিক। মাথার চুল কালো ও পোড়া এবং অনুমান ১৮ ইঞ্চি লম্বা। নাক দিয়ে সাদা ময়লা বের হচ্ছে। মুখ ও উভয় চোখ বন্ধ। লম্বা অনুমান ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। গায়ের রঙ ফর্সা।

পরনে রাউন্ড-গজ ছাড়া কিছু নেই। মুখমণ্ডল গোলাকার, উভয় কান, থুতনি, গলা, ঘাড় পোড়া ও ঝলসানো। উভয় হাতের আঙুল পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ, যা পোড়া ঝলসানো। গলার নিচ থেকে বুক-পেট-পিঠ-যৌনাঙ্গ-মলদ্বারসহ উভয় পায়ের পাতা পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ ও সরকারি চাদর দিয়ে ঢাকা।

সুরতহাল প্রতিবেদনে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ঢামেক বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক স্বাক্ষরিত মৃত্যুর প্রমাণপত্র পর্যালোচনা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল সকাল আনুমানিক পৌনে ১০টায় ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সাইক্লোন সেন্টার ভবনের ছাদে নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন অথবা পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। 

আহত অবস্থায় লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য একই তারিখে অর্থাৎ ৬ এপ্রিল বিকাল তিনটায় ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিইউ ওয়ার্ডের রেড ইউনিটে এনে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত জাহান রাফি মারা যান।

 

 

টাইমস/কেআরএস/এসআই

Share this news on: