ইউরোপের দৃষ্টিনন্দন সাতটি সেতু

সেতু কেবল চলার পথ নয়, কোনো কোনো সময় সেটি হয়ে উঠে ক্ষমতা আর প্রভাব দেখানোর মাধ্যমও৷ আবার কোনো সময় চমৎকার স্থাপত্যের নিদর্শন হিসাবে বিপুল পর্যটক সমাগমও ঘটায় অনেক সেতু৷

টাওয়ার ব্রিজ, লন্ডন

বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত টানাসেতু টাওয়ার ব্রিজ৷ সেতুটির ওপরে দুটি টাওয়ার থাকলেও মূলত এর নামকরণ করা হয়েছে ‘টাওয়ার অব লন্ডন’ থেকে৷ প্রতিদিন ৪০ হাজার যানবাহন চলে সেতুটির ওপর দিয়ে, আর নিচ দিয়ে রয়েছে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা৷ বড় জাহাজ পার করতে সেতুর মধ্যভাগ যখন উঁচিয়ে তোলা হয়, তখন এটি মোহনীয় দৃশ্যের অবতারণা করে।

গ্লেনফিনান রেলসেতু, স্কটল্যান্ড

অভিজাত ও প্রেমময় এই রেলসেতু ‘হ্যারি পটার’ সিনেমার মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ বাস্তবে বাষ্পীয় ইঞ্জিনের রেল ‘দ্য জ্যাকোবিট’ এই সেতু দিয়ে পার হলেও সিনেমায় দেখানো হয়েছে হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস৷ ২১ একর জায়গা নিয়ে ৩৯০ মিটার লম্বা গ্লেনফিনান৷

রিয়ালতো সেতু, ভেনিস

ইতালির ভেনিসের সান পোলো ও সান মার্কো ডিস্ট্রিক্টকে সংযুক্ত করেছে গ্র্যান্ড ক্যানেলের ওপরের নির্মিত রিয়ালতো সেতু৷ সেতুর অবকাঠামোকে ধরে রাখতে দেয়া আছে ওক গাছের ১২ হাজার খুঁটি৷ ছাদবিশিষ্ট ওই সেতুর দেয়ালের দৃষ্টিনন্দন সব চিত্রকর্ম নজর কাড়ে পর্যটকদের৷

মার্চেন্টস ব্রিজ, এয়ারফুর্ট

এটা কি সেতু, না বাড়িঘর? দুটোই বলা যেতে পারে৷ ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বাসভবন নিয়ে গড়া হয়েছে জার্মানির এয়াফুর্টের মার্চেন্টস ব্রিজ৷ প্রথমে সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল কাঠ দিয়ে, পরবর্তীতে ১৩২৫ সালে এটিকে রূপান্তর করা হয় পাথুরে স্থাপনায়৷ সেখানে মসলা ও দামি মেটালসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে থাকেন হকাররা৷ সেতুর ওপরে বিশেষ পণ্যের দোকান আর গ্যালারি দেখাও পাবেন আপনি৷

ওবারবাউম সেতু, বার্লিন

বার্লিনের সুদৃশ্য ও আড়ম্বরপূর্ণ সেতু ওবারবাউম, যেটি ক্রয়েৎসব্যার্গ ও ফ্রিডরিশহাইন ডিস্ট্রিক্টকে সংযুক্ত করেছে৷ সেতুর আশপাশে রয়েছে অগণিত ক্লাব আর ডিসকো বার৷ এমন পরিবেশের কারণে এটি যেমন পার্টির জন্য জনপ্রিয়, তেমনি সূর্যস্নানকারীদেরও পছন্দের জায়গা৷ ক্ষণে ক্ষণে বার্লিন মেট্রোর আসা-যাওয়া দুর্গের আবহ দেয় স্প্রে নদীকে।

থ্রি ব্রিজেস, এডিনবরা

থ্রি ব্রিজেসের বিস্তৃতি ‘ফার্থ অব ফোর্থে’, যেটি ফাইফ এলাকাকে এডিনবরা'র সঙ্গে সংযুক্ত করেছে৷ লাল রঙের ‘ফোর্থ রেল ব্রিজ’ পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ একক খিলানের সেতু৷ ১৮৯০ সালে নির্মিত এই সেতু এখন ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ৷ এই সেতুর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৪ সালে চার লেনের ‘ফোর্থ রোড ব্রিজ’ নির্মাণ করা হয়৷ আর ২০১৭ সালে নির্মিত ‘কুইন্সফেরি ক্রসিং’ উত্তরাধুনিক প্রকৌশল শিল্পের অন্যতম নির্দেশকে পরিণত হয়েছে৷

ওল্ড ব্রিজ, হাইডেলব্যার্গ

জার্মানির শুদ্ধতম রোমান্টিক শহর হচ্ছে হাইডেলব্যার্গ৷ কেবল পুরাতন শহর আর পুরাতন প্রাসাদ নয়, হাইডেলব্যার্গের বিখ্যাত ওল্ড ব্রিজও তেমন প্রেমময় আবেশ তৈরি করে৷ যুদ্ধ আর বন্যায় আগের কাঠের সেতু নষ্ট হয়ে গেলে ১৮ শতকে এটিকে পাথর দিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়৷

সূত্র:ডয়েচ ভেলে

 

টাইমস/এএস/এসআই

Share this news on: