খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের সড়ক-রেলপথ অবরোধ

মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ নয় দফা দাবি আদায়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা আবার ধর্মঘট শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক ৯ দফা দাবিতে খুলনায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন। বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ এ কর্মসূচি আহ্বান করে।

সোমবার সকাল ৮টায় নগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন শ্রমিকরা। টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ এবং সমাবেশ করছেন তারা। এর ফলে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। সারাদেশের সাথে এখন রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে খুলনার। যানবাহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অবরোধ চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

রেলপথ অবরোধ থাকার কারণে সকাল থেকে খুলনা থেকে ঢাকামুখী চিত্রাসহ সব ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন মাস্টার মানিক সরকার।

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, খুলনার প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকদের ৬ থেকে ১০ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এর ফলে শ্রমিকরা পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়া বিজেএমসি মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেও কবে থেকে কার্যকর হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সে কারণে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকরা কাজ করে ন্যায্য মজুরি চায়। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ সময়মতো মজুরি দিচ্ছে না। সরকারি চাকরিজীবীদের দফায় দফায় বেতন বাড়লেও শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি।

এর আগে ২ থেকে ৪ এপ্রিল পাটকল শ্রমিক লীগ এবং সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদ যৌথভাবে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট ও রাজপথ-রেলপথ অবরোধ পালন করে। এরপর শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে গত ৬-৭ এপ্রিল ঢাকায় বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা হয়। কিন্তু সেই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবার ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেন পাটকল শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের ঘোষিত দাবির মধ্যে রয়েছে—সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পিএফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া টাকা প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ীকরণ, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।

আরও পড়ুন...

নববর্ষেও রাস্তায় খুলনাঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: