ইতালিতে গ্রেফতার হলেন দেশটিতে আওয়ামীলীগের সহসভাপতির দায়িত্বে থাকা নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিসা বানিজ্যে জড়িত ছিলে তিনি। বাংলাদেশী কর্মীদের ইতালিতে কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভনে হাতিয়ে নিতেন মোটা অংকের টাকা। একই অভিযোগে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাসহ মোট ৫জন গ্রেফতার হয়েছেন। তবে নজরুল ইসলামকেই এই চক্রের মূল হোতা বলে দাবি করছে ইতালির প্রশাসন। নজরুল ইসলাম ইতালিতে নিজেকে এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিতেন বলেও জানা যায়।
জানা যায়, গত বছর দেশটির ক্ষমতাসীন দল ‘ফ্রাতেল্লি দি ইতালিয়া’র নেতা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আন্দ্রেয়া দি জুসেপ্পেকে ভিসা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার বিনিময়ে লোভনীয় প্রস্তাব দেয় চক্রটি। তাকে ২০ লাখ ইউরো বা প্রায় ২৫ কোটি টাকা, নতুন মডেলের রোলেক্স ঘড়ি, দামী স্মার্টফোন, ট্যাব ও দুবাইয়ে পরিবারসহ বিলাসবহুল বাসায় অবস্থানসহ ভ্রমণের খরচ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু আন্দ্রেয়া তাদের প্রস্তাব গ্রহণ না করে গত বছরের ৩০ মার্চ রোমের ফাইন্যান্স পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর এটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
২০ ফেব্রুয়ারি দেশটির আদালতের নির্দেশে তাদের আটক করা হয় বলে এক্স-পোস্টে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিয়ো তায়ানি৷ আটক ইতালি দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দী এবং নজরুলসহ আরেকজনকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দেশটির প্রায় সব সংবাদমাধ্যমও বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।ইতালির প্রথম সারির পত্রিকা ‘এল সোলে’ বলেছে, রোমের এল সিচিলিয়ানো ফিস’ নামের একটি রেস্তোরাঁর মালিক নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ইতালি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ভিসা বাণিজ্য করে আসছিলেন।
চক্রটি প্রতিটি কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। এছাড়া ভ্রমণ ভিসার জন্য ৭ হাজার ইউরো সমপরিমাণ টাকা নিত তারা। চক্রটির সদস্য ঢাকার ইতালি দূতাবাসের ভিসা অফিসার রবের্তো আলবের্গো ওয়ার্ক পারমিট যাচাই-বাছাই ছাড়া ভিসা ইস্যু করে দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।