সৌদি আরবের রিয়াদে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত ওমর লিব্বি আমের আজওয়াদ, কূটনৈতিক কোরের ডিন ও জিবুতির রাষ্ট্রদূত দায়া আদদিন সাঈদ বামাখারামা, এবং প্রিন্স সুলতান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নুরুন্নবী।
রাষ্ট্রদূত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে মাতৃভাষা বাংলা রক্ষা করার বিষয়ে বাঙালি জাতির অবদানের কথা বিদেশিদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দিবসটি পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে সংগ্রাম ও ভাষার অধিকার আদায়ের এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত।
এসময় রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বিশেষ দিনে ভাষার বৈচিত্র্য, শান্তি এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, যা প্রথমে ইউনেস্কো এবং পরে জাতিসংঘ দ্বারা ঘোষিত হয়েছিল সারা বিশ্বের মানুষের জন্য, বিশেষ করে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণের দিন, যারা তাদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকারের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি বলেন,দ্রুতই পৃথিবী থেকে বিভিন্ন ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। তিনি মাতৃভাষা রক্ষায় দেশ কালভেদে পৃথিবীর সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাতৃভাষায় শিক্ষার ওপর জোর দেন। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিজ নিজ ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ এবং নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন বক্তারা। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রত্যেককে নিজ নিজ ভাষা চর্চা বৃদ্ধির মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বজায় রাখতে বক্তারা আহ্বান করেন।
এ ছাড়া ভাষার বৈচিত্র্য যে কোনো দেশের জন্য গর্বের বিষয় বলে জানান বক্তারা। ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারি-কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতিতে অবদান রাখায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে। এসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি তথ্যচিত্র ও বিভিন্ন ভাষায় একুশে ফেব্রুয়ারির গান পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে ১০ জন রাষ্ট্রদূতসহ ৪০ জন কূটনীতিক যোগদান করেন।