ইলন মাস্কের কানাডিয়ান নাগরিকত্ব বাতিলের আবেদনে সই করেছেন আড়াই লাখের বেশি মানুষ। তাদের দাবি, বিশ্বের শীর্ষ এই ধনকুবের কানাডার সার্বভৌমত্ব নষ্ট করছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের রিপাবলিকান প্রশাসনের অতি ঘনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ইলন মাস্ক। পালন করছেন অর্থ বিষয়ক বিভাগের নবগঠিত ডি/ও/জি/ই বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব।
ইলন মাস্কের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার প্রটোরিয়ায়। পারিবারিকভাবেই বেশ বিত্তশালী মাস্কের পরিবার একসময় অভিবাসী হিসেবে আশ্রয় নেন কানাডায়। এরপর মা মে মাস্কের মাধ্যমে অর্জন করেন কানাডার নাগরিকত্ব।
অবশ্য ব্যবসায়িক কারণে বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটাতে হয় মাস্ককে। ধীরে ধীরে টেসলা, স্পেস এক্স, টুইটারসহ বেশকিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ইলন মাস্ক হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব অর্জন করেন মাস্ক। কেবল তাই নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অন্যতম শীর্ষ উপদেষ্টাও মাস্ক। অনেকে বলছেন, ট্রাম্প নামেমাত্র প্রেসিডেন্ট। মূল দায়িত্ব ও সিদ্ধান্ত তো মাস্ক নিচ্ছেন।
সম্প্রতি ঐতিহাসিক মিত্র কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকায় সেই দায়ও তাই মাস্ককেই দিচ্ছেন কানাডিয়ানরা। তার কানাডিয়ান নাগরিকত্ব বাতিলের আবেদনে বলা হয়েছে, ইলন মাস্ক এমন এক বিদেশি সরকারের সদস্য হয়ে উঠেছেন, যারা কানাডার সার্বভৌমত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।
এতে আরও বলা হয়, ইলন মাস্ক কানাডার স্বার্থবিরোধী প্রস্তাবে ট্রাম্পকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছেন। ট্রাম্প বারবার কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কানাডার রাজনৈতিক নেতাদের উপহাস করেছেন এবং কানাডাকে মার্কিন অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে কটাক্ষ করেছেন। কানাডিয়ান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও মাস্কের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রতিবাদ আসেনি।
কানাডার সংবিধান অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি অভিবাসন আবেদনে জালিয়াতি করেন, মিথ্যা কথা বলেন, অথবা কানাডার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংঘাতে বিদেশি সেনাবাহিনীতে কাজ করেন তাহলে তার কানাডার নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে।
কানাডিয়ান ফেডারেল আইন প্রণেতা চার্লি অ্যাঙ্গাস বলেছেন, মাস্কের নাগরিকত্ব বাতিলের এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষ অলিগার্ক বা ধনী ব্যক্তি এবং চরমপন্থিদের ক্রমবর্ধমান শক্তির প্রতি ন্যায্য ক্ষোভ প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছে। ইলন মাস্কের মতো লোকেরা কানাডার শত্রু বলেও মন্তব্য করেন তিনি।